সিএএ আতঙ্কে কলকাতায় যুবকের আত্মহত্যা, দাবি পরিবারের

0

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হলে দেশ ছাড়া হতে পারে আর এই আতঙ্কেই আত্মহত্যা করেছেন দক্ষিণ কলকাতার নেতাজি নগরের এক বাসিন্দা। নেতাজি নগরের নারকোলবাগান এলাকার বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী দেবাশীষ সেনগুপ্ত সোনারপুরে তার মামার বাড়ি গিয়ে বৃহস্পতিবার আত্মঘাতী হন। ঘরের মধ্য থেকেই তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেয় চিকিৎসকরা। 

দেবাশীষের মামি শোভা রায় জানান, সিএএ চালু হওয়ার পর থেকে গত কয়েকদিন ধরেই আতঙ্কগ্রস্ত ছিল দেবাশীষ। কারণ তার ঠাকুর দাদা বাংলাদেশ থেকে এসেছিল। যদিও দেবাশীষের জন্ম কলকাতাতে। কিন্তু দেবাশীষ সবসময় আতঙ্কে থাকতো তাকে হয়তো বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।’  

এদিকে ছেলের এই অকাল মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তার বৃদ্ধ বাবা তপন সেনগুপ্ত। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে বলতেও এই তপন সেনগুপ্তই। 

জানা গেছে দেবাশীষ সেনগুপ্ত নেতাজী নগরে তার মাসির বাড়িতে থাকতেন। সেই খবর পেয়ে রাতে দেবাশীষ সেনগুপ্তের নেতাজীনগরের বাড়িতে আসে তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা দেবাশীষ সেনগুপ্তের বাবা তপন সেনগুপ্তের সাথে দেখা করেন। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ নাজিমুল হক, দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী ও তৃণমূলের যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ। দেবাশীষের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সব রকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। 

সিএএ’র প্রতিবাদ করে শশী পাঁজা জানান আমাদের একজন সহ নাগরিক আত্মহত্যা করেছেন। আমরা তার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে আসি। যে আতঙ্ক নিয়ে তিনি মারা গেছেন আমরা তার প্রতিবাদ করছি। দেবাশীষের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছিল যে তিনি সিএএ চালু হলে দেশছাড়া হয়ে যাবেন, ভিটে মাটি হারা হবেন। সি এ এ নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি যে খেলাটা খেলছে সেটা অত্যন্ত মারাত্মক, আসলেও আমরা এরকম ঘটনা দেখেছি। শশী পাঁজার প্রশ্ন দেবাশীষের সব নথি থাকা সত্ত্বেও তাকে কেন মরতে হলো? যারা তাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করলো, তারা কি দোষী নয়, অপরাধী নয়?’ 

কালীঘাটের সাউথ সাবারবান স্কুলে পড়াশোনা করা মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত দেবাশীষ খেলাধুলাতেও পারদর্শী ছিল। 

সম্প্রতি ভারত জুড়ে সিএএ চালু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকদের (হিন্দু শিখ খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ) ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। 

আর এরপরই তার প্রবল বিরোধিতা করে বিরোধী দলগুলি। তৃণমুল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জীর অভিযোগ ‘…নাগরিকত্বের আবেদন জানালেই বেনাগরিক হয়ে যাবেন, সরকারি সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।’

যদিও দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন এই আইন কারো নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়ার নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here