কলকাতার গার্ডেনরিচে ভবন ভেঙে নিহত ২, দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন মমতার

0

দু’দিন আগে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে এবং নাকে গুরুতর আঘাত পান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কপালে এবং নাকে মোট চারটি সেলাই পড়েছে। পুরো কপাল জুড়ে রয়েছে ব্যান্ডেজ। এখনো শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। এই অবস্থায় কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকায় ভবন চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে গেলেন সেখানে। মানুষ মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন, পাশে থাকার বার্তা দিলেন। 

রবিবার রাতে কলকাতার গার্ডেনরিচ থানার অন্তর্গত ফতেপুর এলাকায় তাতিপাড়ায় ভবন চাপা পড়ে এখনো পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন সামা বেগম (৪৭) এবং হাসিনা খাতুন (৫৫)। আহত অন্তত ১৫ জনের মতো। আহতরা এসএসকেএম ও স্থানীয় নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা ভেঙে পড়া ওই ভবনের নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে থাকতে পারে। রাত থেকেই এখনও চলছে উদ্ধার কাজ। সোমবার সকালেই ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ফায়ার সার্ভিস মন্ত্রী সুজিত বসু, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায় প্রমুখ। 

অন্যদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। নিহত ও আহতদের পরিবার প্রতি আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও দেন তিনি। 
এই ঘটনায় বিগত বামফ্রন্ট সরকারকেই নিশানা করে মেয়র বলেন ‘এই বাড়ির প্ল্যান থাকতে পারে না। যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একজনের পাপে অন্যজন শাস্তি পাচ্ছে। এত সরু গলিতে এত বড় বাড়ি কিছুতেই হতে পারেনা। আহতরা সকলেই ভেঙে পড়া ভবনের পাশে টালির বাড়িতে থাকতেন।’ 

উল্লেখ্য রবিবার দিবাগত রাত বারোটা নাগাদ বিকট শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। প্রথমে ভূমিকম্প মনে হলেও পরে জানা যায় পাশেই একটি নতুন নির্মীয়মান ‘জি প্লাস ফাইভ’ ভবন ভেঙে পড়ে। আর তা গিয়ে পড়ে নিচে থাকা বস্তিবাসীর উপর। সে সময় গভীর নিদ্রায় মগ্ন ছিল সেখানকার বাসিন্দারা। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয় এলাকায়। চারিদিক থেকে ভেসে আসে আর্তনাদ। তাদের চেঁচামেচি চিৎকার শুনে স্থানীয় মানুষরা ছুটে এসে উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। কিন্তু লোহার রড ও সিমেন্ট বালির অংশ বেশি থাকার ফলে উদ্ধারকার্য ব্যাহত হয়। এরই মধ্যে দুর্ঘটনার খবর দেয়া হয় গার্ডেনরিচ থানাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও দুর্যোগ মোকাবিলা দলের সদস্যরা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ওই ভবনটি তৈরি করা হয়েছিল।  

এদিকে গার্ডেনরিচের ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন ‘তৃণমূল নেতারা গোটা কলকাতাকে অবৈধ নির্মাণের টেন্ডার দিয়ে রেখেছে। তৃণমূল নেতারা প্রতি স্কোয়ার ফিটে পয়সা নেয়। আজকে একটা ভবন ভেঙেছে, ৩০ বছর পর আরো বাড়ি ভাঙবে।’ 
ভবন ভেঙে পড়ার ঘটনায় দুর্নীতিকেই দায়ী করে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন ‘পশ্চিমবঙ্গে খুব বেশি পরিমাণে বেআইনি ভাবে ভবন গড়ে উঠছে।  তাতে কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ সকলেই রুপি খাচ্ছে। ফলে কোনরকমে ইট, সিমেন্ট দিয়ে একটা ভবন দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। ফলে এখানে নির্মীয়মান ব্রিজ ভেঙে পড়ে, ফ্লাইওভার  ভেঙে পড়ে, এখন বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে। 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here