রংপুর অঞ্চলের কৃষি জমির স্বাস্থ্যের কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হচ্ছে না। জমিতে জৈব সারের ব্যববহার বাড়লেও যে পরিমাণ জৈব সার ব্যবহার করলে জমির স্বাস্থ্য রক্ষা হবে সেই পরিমাণ পদার্থ ব্যবহার হচ্ছে না এই অঞ্চলে। একটি স্বাস্থ্য সম্মত জমিতে ৫ শতাংশ জৈব সারের প্রয়োজন হলেও রংপুর অঞ্চলের জমিতে এক থেকে দেড় শতাংশ জৈব পদার্থ রয়েছে। ফলে এই অঞ্চলের জমিগুলো এখনো স্বাস্থ্যহীনতায় ভুগছে। মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়াতে হলে কৃষকদের আরো সচেতন হতে হবে বলে মনে করছেন কৃষিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ। সুষম সারের ব্যবহার কিছুটা বাড়লেও কমেছে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার। এছাড়া সঠিক বয়সে চারা রোপণ করছে না এখনো ৪ শতাংশ কৃষক।
রংপুর কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় জৈব সারের ব্যবহারে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি ব্যবহার হবে। প্রায় পৌনে তিন লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে জৈব সার ব্যবহার হওয়ার কথা রয়েছে। গত কয়েক বছরে এর ব্যবহারের হার বেড়েছে ৫ গুণেরও বেশি। তবে জমির স্বাস্থ্য রক্ষায় যে পরিমাণ জৈব পদার্থ দরকার তা বাড়ছে না।
কৃষিবিদদের মতে, রংপুর অঞ্চলে গড়ে এক থেকে দেড় শতাংশ জৈব পদার্থ রয়েছে। এই অঞ্চলের মাটির প্রাণ শক্তি আরো বাড়াতে হলে জৈব সারের ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে। প্রাণিজ জৈব সার বলতে গৃহপালিত পশুপাখির মলমূত্র পচিয়ে তৈরিকৃত বস্তুকে বোঝায়। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রাণিজ জৈব সার হচ্ছে গোবর। কিন্তু আমাদের দেশে প্রাপ্ত গোবরের এক বিরাট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যদিও দেশজুড়ে জ্বালানি হিসেবে এগুলোর মূল্য রয়েছে, তথাপি মাটির উন্নয়নকল্পে যতটুকু সম্ভব তা জমিতে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করার আহবান মৃত্তিকা গবেষকদের।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আগে রংপুরের জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ছিল শূন্য দশমিক ৮ ভাগ। এখন তা বেড়ে হয়েছে দেড় শতাংশের বেশি। জমির জৈব পদার্থের পরিমাণ ৫ শাতাংশে বাড়াতে হলে কৃষকদের আরো সচেতন হতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সচেনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।