স্কোয়াশ চাষে অধিক লাভ, খুশি কৃষক

0

স্বল্প সময়েই সাশ্রয়ী মূল্যে উৎপাদন করে অধিক লাভের আশায় উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষকৃত ফসল স্কোয়াশ এখন দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাষ শুরু হয়েছে। জেলার চিরিরবন্দরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষ করে সফল ও বাজিমাত করেছেন দুই কৃষক। বিদেশি এ সবজির ফলন কেমন হয় তা দেখতে পরীক্ষামূলকভাবে নিজের জমিতে চাষাবাদ করেন তারা।

ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় বিদেশি সবজি চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের। তিন মাসেই লাভের আশা। ইতিমধ্যে চাষের স্কোয়াশ বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেছেন তারা। তাই বৃহৎ পরিসরে স্কোয়াশ চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় শীতকালীন সবজির পাশাপাশি জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে তারা লাভবান হয়েছেন।

চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউপির নান্দেড়াই গ্রামের স্কোয়াশ চাষি মো. নুর ইসলাম জানান, ৭ শতক জমিতে প্রথম স্কোয়াশ চাষ করেছি। স্কোয়াশ গাছ দেখতে একদম মিষ্টি কুমড়া গাছের মতো। পাতা, ডগা, কান্ড দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি মিষ্টি কুমড়া নাকি স্কোয়াশ গাছ। চাষ শুরুর প্রায় দেড় মাস পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। পরীক্ষামূলক চাষে বাজিমাত। তিনি স্থানীয় বেলতলী ও ঘুঘুরাতলী বাজারে আকারভেদে প্রতি পিস স্কোয়াশ ৩০-৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ জমি থেকে সপ্তাহে ২-৩ বার করে স্কোয়াশ তুলছেন তিনি। চাষ শুরু থেকে ফলন আসা পর্যন্ত মাত্র এক হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ২০ হাজার টাকার স্কোয়াশ বিক্রি করেছেন। আরও প্রায় ৫-৬ হাজার টাকার স্কোয়াশ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

আরেক স্কোয়াশ চাষি হলেন পুনট্টি ইউপির ভবানীপুর গ্রামের মো. আহাদ আলী মোল্লা। তিনি উপজেলার আমতলী ও আমবাড়ীহাটে প্রতি পিস স্কোয়াশ ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তাদের ক্ষেতের প্রতিটি স্কোয়াশ দেড় থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হয়েছে। প্রতিটি স্কোয়াশ গাছের গোড়ায় ৮-১২টি পর্যন্ত ফল ধরে। এটি কয়েকদিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়।

উপজেলার আব্দুলপুর ও পুনট্টি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লাবনী আক্তার ও মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, স্কোয়াশ শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী জাতের সবজি। স্কোয়াশ চাষের ক্ষেত্রে কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার, ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ ফাঁদ ও জৈব বালাইনাশক প্রদান করা হয়েছে। চাষে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন, সে জন্য সার্বক্ষণিক তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, স্কোয়াশ সবজি জাতীয় ফসল। যা কুমড়া ও ধুন্দল জাতীয় ফসলের ক্রস। দেশের প্রচলিত কোনো সবজির এমন উৎপাদন ক্ষমতা নেই। দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আমাদের পরামর্শে কৃষকরা স্কোয়াশ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। আগামীতে স্কোয়াশ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here