সিরিয়া এবং ইরাকে থাকা ইরানি বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ধারাবাহিক হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের পার্টনার সিবিএস নিউজকে এ কথা জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
গত রবিবার সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে একটি ড্রোন হামলায় তিন জন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক নামে পরিচিতি ওই গোষ্ঠীটিতে এমন কিছু সশস্ত্র যোদ্ধা রয়েছে যাদেরকে অস্ত্র, তহবিল ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইরানের প্রতিরক্ষাবাহিনী রেভোলিউশনারি গার্ডস ফোর্স। ধারণা করা হয় যে, রবিবারের হামলার পেছনে এই গোষ্ঠীর হাত ছিল।
এরইমধ্যে হামলার জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। টাওয়ার ২২ নামে পরিচিতি ওই সামরিক ঘাঁটিতে হামলার ফলে আরও ৪১ জন মার্কিন সেনা আহত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দারা বিশ্বাস করে যে, সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল তা ইরানেই তৈরি করা এবং ইউক্রেনে হামলার চালানোর উদ্দেশ্যে রাশিয়ায় ইরান যে ড্রোন পাঠিয়েছে তার সাথে এর মিল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লইড অস্টিন বিলম্বিত সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “আমরা যেখানে, যখন এবং যেভাবে চাই, সেভাবেই পাল্টা পদক্ষেপ নেবো।”
লইড অস্টিন বলেন, “প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনাটা নিশ্চিত করতে হবে, এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে সবাই জানেন বলে আমি মনে করি”। সাথে যুক্ত করেন, “এটি নিশ্চিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সূত্র বা নিয়ম নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এটি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সেজন্য অনেকগুলো উপায় আছে। আর আমরা সেটার উপরই গুরুত্ব দিয়ে আসছি”।
সিবিএস নিউজের সাথে যে কর্মকর্তারা কথা বলেছেন তারা হামলার সম্ভাব্য সময়সীমা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছু জানাননি।
শুধু জানিয়েছেন যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী খারাপ আবহাওয়ার সময় এই হামলা চালাতে পারে। তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যাতে হামলার ঝুঁকি এড়ানো যায় এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় স্পষ্ট দৃষ্টিসীমা যাতে থাকে সে বিষয়েও নজর রাখা হবে।
ইরানের মাটিতে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের চাপ রয়েছে। এরমধ্যে ওয়াশিংটনে থাকা ইরানের কট্টর সমালোচকরাও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বার বার ড্রোন হামলার জবাব দেওয়ার কথা বলে আসলেও বাইডেন এবং তার অন্য প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরানের সাথে বড় কোনো যুদ্ধে জড়াতে বা ওই এলাকায় উত্তেজনা আরও বাড়াতে চায় না ওয়াশিংটন।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, “আমি এটা চাইছিলাম না”।
অনুমোদন পাওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইরানের যে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হবে সেগুলো সিরিয়া এবং ইরাকে অবস্থিত হবে, ইরানের নিজস্ব ভূখণ্ডের মধ্যে নয়।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরান সমর্থিত বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা বাড়িয়েছে।
সূত্র : সিবিসি নিউজ।