পাকিস্তান ক্রিকেট নিজের পায়েই কুড়াল মারছে : মিকি আর্থার

0

২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ ছিলেন মিকি আর্থার। তার অধীনেই ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল  পাকিস্তান। ২০১৯ বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে না পারার কারণে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতানো কোচকে বিশ্বকাপের পর বিদায় করেছিল পাকিস্তান। পরে তিনি আবারও পাকিস্তানে ফেরেন।

২০২৩ সালে আর্থার যোগ দেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের ডিরেক্টর হিসেবে। তবে ভারতে গত অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পর ফের তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

আর্থারকে ২০২৩ সালে ফিরিয়ে এনেছিলেন প্রাক্তন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন নাজাম। দায়িত্বে ফিরেই তিনি পাকিস্তান ক্রিকেটে ফেরান আর্থারকে। নাজাম শেঠি বিদায় নেওয়ার পর পাকিস্তান বিশ্বকাপে ভালো করতে না পারলে আর্থারকেও চুক্তির আগে চলে যেতে হয়। নতুন পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফ আর্থারের উপর ভরসা রাখেননি। বদলে ফেলা হয় পুরো কোচিং ইউনিটকে।

নির্বাচক ইনজামাম-উল-হক তো বিশ্বকাপের মধ্যেই পদত্যাগ করেছিলেন। সাক্ষাৎকারে আর্থার এই হুটহাট রদবদলের প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন। 

তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত দেখছি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়ে পেড়েক মারছে। প্রতিভা আছে, প্রয়োজন সঠিক কাঠামো, ভালো নেতৃত্ব। যথাযথ উপদেশের সঙ্গে চাই ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্ব। ২০১৬ থেকে ২০১৯, নাজামকে (নাজাম শেঠি) ধন্যবাদ, তখন আমাদের কাছে এমন খেলোয়াড় ছিল, যারা প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করত। আমি যখন ইনজির (ইনজামাম-উল-হক, প্রাক্তন নির্বাচক) সঙ্গে বসতাম, যার সঙ্গে আমার দারুণ কাজের বোঝাপড়া, দল নির্বাচন করতাম, দলের সঙ্গে পরে যে আলোচনা হত, তারা জানত একটা স্থায়ী কাঠামো আছে।’

আর্থার এরপর যোগ করেন, ‘আমি ও ইনজি তাদের ধারাবাহিকতা এনে দিচ্ছিলাম। আমি একজন খেলোয়াড়কে বলতে পারি (ফখরকে উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক) যে, তুমি আগামী ১০টি ওয়ানডে খেলবে। আমরা জানি ও আমাদের ম্যাচ জেতাবে। মাঝেমধ্যে এটা অনেক ঝুঁকির। কিন্তু অন্তত খেলোয়াড়দের কাঠামোর প্রতি বিশ্বাস ছিল, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিশ্বাস করত এবং দলের জন্য খেলত।’

কিন্তু বারবার পরিবর্তনের ফলে ক্রিকেটাররা নিজেদের জন্য খেলা শুরু করেন বলেই মনে করেন আর্থার। তার দাবি, ‘যদি এখানে ক্রমাগত পরিবর্তন এবং অস্থিরতা থাকে, খেলোয়াড়রা নিজেদের সুরক্ষিত করতে চাইবে। যে কারণে তারা নিজেদের জন্য খেলতে শুরু করে পরবর্তী সফরের কথা চিন্তা করে। এটা দেখা হতাশাজনক যে, খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হয় না, কোনো সঠিক যোগাযোগ মাধ্যম নেই এবং তারা জানে যে, বিষয়গুলো সব সময় পরিবর্তন হতে চলেছে।’

আর্থারের দাবি এভাবে পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়েই কুড়াল মারছে। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় ভাবে পাকিস্তানে অনেক প্রতিভা আছে। আমরা একটি উচ্চমানের কার্যকরী কাঠামো তৈরি করেছিলাম এবং আমরা সেটা বাস্তবায়নও করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান পদের পরিবর্তনের সঙ্গে এটি হারিয়ে গেছে। খুবই হতাশাজনক। আমি এখনও মনে করি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়েই কুড়াল মারছে, তবে এটা আরও ভালো হতে পারত।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here