রাশিয়ায় নতুন ধরনের পারমাণবিক জ্বালানি উদ্ভাবন

0

নতুন ধরনের ইউরেনিয়াম-প্লুটোনিয়াম মক্স ফুয়েল উদ্ভাবন করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটম। দেশটির একটি কারখানায় নতুন এই জ্বালানির তিনটি অ্যাসেম্বলি তৈরি হয়েছে, যার পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিগগিরই এগুলো বেলাইয়ার্স্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের BN-800 ফাস্ট নিউট্রন রিঅ্যাক্টরে লোড করা হবে। নতুন ধরনের জ্বালানিটিতে এমেরিসিয়াম-২৪১ এবং নেপচুনিয়াম-২৩৭ এর মতো মাইনর অ্যাক্টিনয়েড যুক্ত করা হয়েছে। জ্বালানিটি প্রায় দেড় বছর পরীক্ষামূলকভাবে রিঅ্যাক্টরে ব্যবহৃত হবে।

রসাটমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মক্স ফুয়েল মূলত একটি পারমাণবিক জ্বালানি, যাতে একাধিক ফিসাইল ম্যাটেরিয়ালের অক্সাইড থাকে। এই জ্বালানিতে প্লুটোনিয়ামের সঙ্গে প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম, পুনঃপ্রক্রিয়াজাত ইউরেনিয়াম অথবা ডিপ্লিটেড ইউরেনিয়ামের ব্লেন্ড করা হয়। অন্যদিকে অ্যাক্টিনয়েড হলো প্লুটোনিয়াম ব্যতিরেকে অন্যান্য ট্রান্সইউরেনিক এলিমেন্ট, যেগুলো রিয়্যাক্টরে সংঘঠিত পারমাণবিক বিক্রিয়ার ফলে পারমাণবিক জ্বালানিতে বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে তৈরি হয়। প্লুটোনিয়ামের মতো প্রকৃতিতে এগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই।

মাইনর অ্যাক্টিনয়েড সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে রুশ উদ্ভাবিত নতুন জ্বালানিটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, বিশেষ করে ফাস্ট নিউট্রনের রিঅ্যাক্টরের ক্ষেত্রে। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন মক্স ফুয়েলের অ্যাক্টিনয়েডগুলো বিভাজিত হবার ফলে যেসকল তেজস্ক্রিয় এবং স্থিতিশীল আইসোটোপ তৈরি হয়, সেগুলোর ঝুঁকি স্বাভাবিকভাবে প্রাপ্ত অ্যাক্টিনয়েডগুলোর তুলনায় অনেকাংশেই কম। মাইনর অ্যাক্টিনয়েডের এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে ‘আফটার বার্নিং’ হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে।

রসাটমের টেভেল ফুয়েল কোম্পানির সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার উগ্রিউমভ বলেন, ক্লোজড নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাইকেলের ক্ষেত্রে মাইনর অ্যাক্টিনয়েডের আফটার বার্নিং একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর ফলে চূড়ান্তভাবে সংরক্ষণের জন্য পারমাণবিক বর্জ্যের পরিমাণ অনেকাংশেই হ্রাস করা সম্ভব হবে এবং একই সঙ্গে এই বর্জ্যের তেজষ্ক্রিয়তাও অনেকাংশে কমে যাবে। এর ফলে, পারমাণবিক বর্জ্যের চূড়ান্ত সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার ব্যয় কমে আসবে।

মাইনর অ্যাক্টিনয়েডের আফটার বার্নিংয়ের উদ্দেশ্যে রসাটম নতুন ধরনের জ্বালানি নিয়ে ২০২১ সালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে। ২০৩৫ সাল পর্যন্ত এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে মাইনর অ্যাক্টিনয়েডের পৃথকীকরণ, অন্তর্বতীকালীন সংরক্ষণ, ফাস্ট রিঅ্যাক্টরের জ্বালানিতে ব্যবহার এবং ব্যবহৃত জ্বালানি সংক্রান্ত গবেষণা ইত্যাদি। এর অন্যতম আরেকটি লক্ষ্য হলো রিঅ্যাক্টরগুলোকে এমনভাবে প্রস্তুত করা, যাতে সর্বোচ্চ পরিমাণ মাইনর অ্যাক্টিনয়েডের বিভাজন সম্ভব হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here