লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত তিনটি সংসদীয় আসন এক সময় জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী কালীগঞ্জ) আসনটিতে টানা সাতবার নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির এমপি প্রয়াত মজিবর রহমান। সেই আসন তো বটেই, এবারের নির্বাচনে বাকি দু’টিও খুইয়েছে জাতীয় পার্টি। শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা এবারের সংসদ নির্বাচনে নিজেদের জামানতও হারিয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাটের তিনটি সংসদীয় আসনে বিপুল ব্যবধানে হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। যদিও একটি আসন থেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। তবে অপর দু’টিতে তাদের দুই প্রার্থী নৌকার প্রার্থীর কাছে হেরে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন, যা অংকের হিসেবে জামানত হারানোর উপযুক্ত।
এই আসনে মোট ভোট পড়েছে এক লাখ ১ হাজার ১৫৩টি। বিধান অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেই হিসাবে জামানত বাঁচাতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাহিদ হাসানের প্রয়োজন ছিল অন্তত ১২ হাজার ৬৪৫ ভোটের।
অপরদিকে রবিবার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালিগঞ্জ) আসনে জয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুজ্জামান আহমেদ পেয়েছেন ৯৭ হাজার ৪৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হক পেয়েছেন ৫১ হাজার ৩৩৮ ভোট এবং তৃতীয় হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ১৭৩ ভোট।
লালমনিরহাট-২ আসনে মোট ভোট পড়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৪৮১টি। একই বিধান অনুযায়ী, জামানত বাঁচাতে এই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের প্রয়োজন ছিল অন্তত ১৯ হাজার ৫৬১ ভোটের। এদিকে, লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন জাতীয় পার্টির লাঙলের প্রার্থী হাবিবুল হক বসুনিয়া। এই আসনে নৌকার প্রার্থী মোতাহার হোসেন ৯০ হাজার ৩৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন।