মেলবোর্ন টেস্ট যেখানে শেষ করেছিলেন, সিডনিতে সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন প্যাট কামিন্স। তার আগুনে বোলিংয়ে আরও একবার পুড়ল পাকিস্তানের ব্যাটিং। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের ছোবল সামলে ৯ নম্বরে নেমে পাল্টা আক্রমণে ফিফটি করলেন আমের জামাল। তার চমৎকার ইনিংসে তিনশ পার করল সফরকারীরা।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন পাকিস্তানকে ৩১৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শেষ বেলায় এক ওভার ব্যাটিং করে ৬ রান করেছে তারা, হারায়নি কোনো উইকেট। এখনও ৩০৭ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
একশর আগে পাঁচ উইকেট হারানো পাকিস্তান ঘুরে দাঁড়ায় মূলত মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আঘা সালমানের ৯৪ রানের জুটিতে। কিপার-ব্যাটসম্যান রিজওয়ান করেন ৮৮ রান ও সালমান ৫৩। ১৩ রানে জীবন পেয়ে ৯৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে দলের রান তিনশ পার করেন জামাল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নয় নম্বরে নেমে পাকিস্তানের সেরা ইনিংস এটি।
হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেট ব্যাটিং সহায়কই ছিল। কিন্তু টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে সেই সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি পাকিস্তান। প্রথম ৮ বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। মিচেল স্টার্কের করা ম্যাচের দ্বিতীয় বলে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন আবদুল্লাহ শফিক। জশ হেইজেলউডের চমৎকার এক ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন অভিষিক্ত সাইম আইয়ুব। দুইজনই ফেরেন শূন্য রানে।
শান মাসুদ ও বাবর আজমের জুটি আশা জাগালেও যেতে পারেনি বেশি দূর। এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে বাবরকে (২৬) ফেরায় অস্ট্রেলিয়া। এই সিরিজে কামিন্সের বলে এনিয়ে তিনবার আউট হন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান। সাউদ শাকিলকেও টিকতে দেননি কামিন্স। লাঞ্চের পর মিচেল মার্শের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন পাকিস্তান অধিনায়ক মাসুদ (৩৫)। ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে পাকিস্তান।
এরপরই শুরু রিজওয়ান-সালমানের লড়াই। তাদের জুটিতে দ্রুত আসতে থাকে রান। চা-বিরতির আগে ৭৪ বলে ফিফটি করা রিজওয়ানকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে খেলায় ফেরান কামিন্সই। সাজেদ খান একবার বেঁচে গিয়েও পারেননি ইনিংস বড় করতে। তাকে ও হাসান আলিকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন কামিন্স। মাঝে ৬৪ বলে ফিফটি করা সালমানকে বিদায় করেন স্টার্ক।
২২৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তখন শঙ্কায় যেকোনো সময় গুটিয়ে যাওয়ার। শেষ উইকেট জুটিতে মির হামজাকে নিয়ে ৮৬ রানের জুটি গড়েন জামাল। দুই ব্যাটসম্যানই জীবন পান একবার করে। ৪ ছক্কা ও ৯ চারে গড়া জামালের ইনিংস থামিয়ে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেন লায়ন।
এই ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন ডেভিড ওয়ার্নার। ব্যাটিংয়ে নামার সময় তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ৬ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি। এখনও কোনো বলের মুখোমুখি হননি উসমান খাওয়াজা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৭৭.১ ওভারে ৩১৩ (শাফিক ০, আইয়ুব ০, মাসুদ ৩৫, বাবর ২৬, শাকিল ৫, রিজওয়ান ৮৮, সালমান ৫৩, সাজিদ ১৫, জামাল ৮২, হাসান ০, হামজা ৭*; স্টার্ক ১৬-২-৭৫-২, হেইজেলউড ১৫-২-৬৫-১, কামিন্স ১৮১-১-৬১-৫, লায়ন ১৭.১-০-৭৪-১, মার্শ ৭-১-২৭-১, লাবুশেন ৩-১-৯-০, হেড ১-০-১-০)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১ ওভারে ৬/০ (ওয়ার্নার ৬*, খাওয়াজা ০*; সাজিদ ১-০-৬-০)