নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন মেম্বারের বাড়িতে অবস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এলাকাবাসী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় এই ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পে দেওয়া আগুন আশপাশের বাড়ি ঘরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ঘুম থেকে জেগে ছোটাছুটি করে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, “এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর এই ক্যাম্প স্থাপনের সময় রাতের বেলা সেখান থেকে ১৯টি চেয়ার জোরপূর্বক নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। শুরুতে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পটি স্থাপনে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে ক্যাম্প স্থাপন করায় ওইদিন রাতেই তারা ১৯টি চেয়ার নিয়ে যায় এবং গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে ভোট করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। এরপরও ক্যাম্প সরিয়ে না ফেলায় গভীর রাতে তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিল।”
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের ছেলে ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তাফিজুর রহমান নীরব বলেন, “আমরা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভয়ে গেল ছয় মাস ধরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলাম। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাত্র দুই/তিন দিন ধরে এলাকায় অবস্থান করছি। গেল কয় বছর ধরে আমাদের এলাকার প্রায় ৫০টি বাড়ি ঘর ভেঙে দিয়েছে রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা। আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটের পর সবাইকে এলাকা ছাড়া করা হবে- এই ঘোষণা দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার মাইকে মাইকিং করে বেড়াচ্ছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কেটলি প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে প্রচারণা শুরু করি। এটা সহ্য করতে না পেরে রফিকের সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে।”
মোস্তাফিজুর রহমান নীরব আরও বলেন, “নাওড়া গ্রামের ওমর ফারুক, মোহাম্মদ শাহীন, রুবেল হোসেন, কানা মোজাম্মেল, জাহিদুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, লিটন হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, অপু, আউয়াল, জসীম উদ্দীন জসু, তরিকুল ইসলাম, এমদাদুল দুলাল এবং মোহাম্মদ রাকিব প্রকাশ্যে এসে আগুন দেয়। আগুন দেওয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল এখনই বুঝি তারা পুরো এলাকায় আক্রমণ শুরু করবে।”
তিনি বলেন, বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও রুপগঞ্জ থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।