গাজায় শান্তির জন্য নেতানিয়াহুর তিন শর্ত

0

গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা হামলা শুরু করে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এর মধ্যেই ২৮ অক্টোবর থেকে স্থল অভিযান শুরু করে দেশটির পদাতিক বাহিনী। এরই মধ্যে ৮২তম দিনে পৌঁছেছে এই যুদ্ধ। এই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে প্রায় ২১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ হাজারেরও বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছে আরও প্রায় ৫৫ হাজার ফিলিস্তিনি।

এই বর্বর আগ্রাসনের কারণে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। তবু থামছে না দেশটির নির্বিচার বোমা হামলা ও স্থল অভিযান।

সোমবার মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি কলাম লিখেছেন নেতানিয়াহু। সেখানেই এসব শর্তের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।

কলামে নেতানিয়াহু মন্তব্য করেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর পশ্চিমতীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি কতৃপক্ষ (পিএ) গাজা শাসন করতে পারবে বলে মনে  হয় না। কারণ পিএ’র সেই সক্ষমতা নেই।

প্রথম শর্ত: হামাসকে ধ্বংস করার ব্যাখ্যায় নেতানিয়াহু বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং অন্য অনেক দেশ উদ্দেশ্যকে সমর্থন করেছে। তারাও চায়, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শেষ হোক। গাজায় হামাসের শাসন অবসান এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট করার মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আর এই লক্ষ্য অর্জন ব্যতীত আমাদের সামনে আর কোনও উপায়ও নেই। কারণ হামাসের নেতারা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন- ৭ অক্টোবরের মতো হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে। সারাক্ষণ এই ঝুঁকির মধ্যে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”

তবে হামাসের কব্জায় এখনও ইসরায়েল এবং অন্যান্য দেশের যে ১২৯ জন নাগরিক জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন, কীভাবে তাদের মুক্ত করা হবে— সে সম্পর্কিত কোনও তথ্য নেতানিয়াহুর কলামে পাওয়া যায়নি।

দ্বিতীয় শর্ত: গাজাকে নিরস্ত্রিকরণের ব্যাখ্যায় নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা চাই না যে গাজা উপত্যকা হামলাকারীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হোক। এ কারণে উপত্যকার পরিসীমা বা সীমান্তে একটি সাময়িক নিরাপত্তা জোন স্থাপন করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে গাজা ও মিশরের মধ্যে যে সীমান্তপথ রয়েছে, সেই রাফাহ ক্রসিংয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো জরুরি। কারণ গাজায় অস্ত্রের চালান ঢোকে মূলত এই সীমান্ত দিয়েই। আমরা যদি প্রত্যাশা করি যে (যুদ্ধ অবসানের পর) পিএ গাজায় এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবে, তাহলে সেটি হবে দিবাস্বপ্ন। কারণ পিএ’র সেই সক্ষমতা কিংবা ইচ্ছা— কোনওটিই নেই।”

তৃতীয় শর্তের ব্যাখ্যায় নেতানিয়াহু বলেন, “ফিলিস্তিনের স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের অবশ্যই এটা শেখাতে হবে যে মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকা অনেক মূল্যবান এবং জীবনের যত্ন নেওয়া জরুরি। ফিলিস্তিনের ইমামরা সবসময় তাদের ধর্মীয় বক্তব্যে ইহুদিদের হত্যার পক্ষে উসকানি দেন— এটা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণ যেন সন্ত্রাসবাদে অর্থের যোগান দেওয়ার পরিবর্তে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইকে সমর্থন করে— সেজন্যও ফিলিস্তিনের সুশীল সমাজকে কাজ করতে হবে।” সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here