শীত কুয়াশায় আলু ক্ষেতে রোগ

0

ঘন কুয়াশা, উত্তরের হিমেল হাওয়া আর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে বগুড়ায় আলু ক্ষেতে রোগবালাই দেখা দিয়েছে। গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, আবার কোনো খেতে কাণ্ডে পচন ধরে মড়ক লেগেছে। পাতা ও কাণ্ড হলুদ হয়ে খসে পড়ছে। আলু চাষিরা বলছেন, ওষুধে রোগ না সারলে এর ফলনে বিপর্যয় হতে পারে।

জানা যায়, গত মৌসুমে বগুড়ায় ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি থেকে ১২ লাখ ২৪ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত জেলা ধরা হয় বগুড়াকে। সারা বছর পর্যায়ক্রমে আলু বিক্রির জন্য ৩৭টি হিমাগার গড়ে উঠেছে। অনেক কৃষক বেশি দাম পাওয়ার আশায় একটু আগেই আলু চাষ শুরু করেন। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে দুই দফা শৈত্যপ্রবাহ, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশায় আলু খেতে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।

বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। বৃহত্তর বগুড়া অঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা বেশি কমে যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত বেশ শীত ও কুয়াশা ছিল। পর্যাপ্ত আলো না পাওয়ায় আলু খেত রোগাক্রান্ত হচ্ছে। 

সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন জানান, এ মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ২৫০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শেষ পর্যন্ত ফলন ভালো পাওয়া যেতে পারে। 

গত বছর প্রায় ১২ লাখ টন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়, উৎপাদন হয় ১৩ লাখ টন। আশা করা হচ্ছে- চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত চাষি পর্যায়ে যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন হবে। আলু চাষিরা জানান, আগাম বাদ দিয়ে পূর্ণ মেয়াদে ৬০-৭০ দিনে এ আলু তুললে বিঘাপ্রতি ৭০-৮০ মণ আলু পাওয়া যাবে।

আলুচাষি হুমায়ুন কবির ও ফারুক হোসেন জানান, কিছু কিছু স্থানে আলু গাছে পচন ও হলুদভাব দেখা দিয়েছে। আলুচাষি মো. আজমল জানান, সরকারি বীজের দামও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১২ টাকা করে। বস্তাপ্রতি সারের দাম বেড়েছে ৩০০-৪০০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম কয়েক দফা বেড়ে যাওয়ায় জমি চাষ ও সেচের খরচ বেড়ে গেছে। ১ ডিসেম্বর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে ফলনে বিপর্যয় হতে পারে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মতলুবর রহমান জানান, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা থাকলে আলু ক্ষেতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। তাদের মাঠ কর্মীরা মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে কৃষকদের সচেতন করাসহ পরামর্শ দিচ্ছেন। আলু ফলনে কোনো ক্ষতি হবে না। আলুর উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here