নিমন্ত্রণের সাজ-পোশাক

0

নিমন্ত্রণে সাজের ক্ষেত্রে সবার আগে মাথায় রাখতে হবে- আপনি কী ধরনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠানের ধরনের ওপর ভিত্তি করেই নিজেকে সাজিয়ে তুলতে হবে। অনেক অনুষ্ঠানে ড্রেসকোড দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের নির্ধারিত পোশাক পরেই সেখানে যাওয়া উচিত। এসবের বাধ্যবাধকতা না থাকলে আপনাকে জেনে বুঝে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সাজ-পোশাক পরতে হবে…

শীত মানে নানা অনুষ্ঠান, নানা আয়োজন। তবে নিমন্ত্রণে যাওয়ার আগে কী পরবেন, কীভাবে সাজবেন, কীভাবে চুল বাঁধবেন; সে বিষয়ে খুঁটিনাটি মাথায় রাখতে হয়। যেমন- পোশাক, সাজসজ্জা, অলংকার নির্বাচনের ব্যাপারেও থাকতে হয় সচেতন। জেনে রাখা ভালো, সবার আগে মাথায় রাখতে হবে আপনি কী ধরনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। সেটা কি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান নাকি অন্য কোনো অনুষ্ঠান তা ভাবতে পারেন। প্রোগ্রামের ধরনের ওপর ভিত্তি করেই নিজেকে সাজিয়ে তুলতে হবে। অনেক অনুষ্ঠানে ড্রেসকোড দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের নির্ধারিত পোশাক পরেই সেখানে যাওয়া উচিত। এসবের বাধ্যবাধকতা না থাকলে আপনাকে জেনেবুঝে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সাজগোজ করতে হবে।

শীতের সময় সাজে উজ্জ্বল রং ব্যবহার করতেই পারেন। পোশাক, মেকআপ বা অ্যাক্সেসরিজ সবকিছুতেই রাখতে পারেন উজ্জ্বল রঙের সমাবেশ। তবে সেটা আপনার সঙ্গে যাচ্ছে কি না সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। শীতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে বিয়ে অনুষ্ঠানের পোশাকটা একটু জমকালো হলেই ভালো। এ ছাড়া জন্মদিন, বিয়েবার্ষিকী বা গেট-টুগেদার-জাতীয় অনুষ্ঠানে সিল্ক, সুতি, কোটা, অ্যান্ডি জামদানি এ ধরনের পোশাক বা শাড়ি মানানসই। ট্র্যাডিশনালের বাইরে সাজতে চাইলে ফিউশন পোশাক বেছে নিতে পারেন। জিন্স, লেগিংসের সঙ্গে ফতুয়া, শার্ট টপস বা কামিজও ভালো লাগে। শীতের সময় গর্জিয়াস পোশাকে কালো রংকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া অন্য কোনো উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরলেও ভালো লাগবে। শীতের কথা মাথায় রেখে এসব অনুষ্ঠানে জামদানি অথবা কোটা শাড়ি পরাই শ্রেয়। শাড়ির সঙ্গে ফুলস্লিভের ব্লাউজ পরতে পারেন। ফ্যাশনের সঙ্গে শীত তাড়াতেও কাজে দেবে। হালকা রঙের শাড়ি পরলে এর সঙ্গে ম্যাচিং করে ভারী শাল অথবা কার্ডিগ্যান পরতে পারেন। শাড়ির এক সাইডে শাল ছেড়ে দিলেও দেখতে বেশ স্টাইলিশ লাগবে। অনেকে সময় বাঁচাতে শাড়ির বদলে পার্টিতে ফুলস্লিভ সালোয়ার-কামিজ অথবা ফতুয়া বেছে নেন। এর সঙ্গে ছোট শাল অথবা চাদর পরুন। ব্যস, পার্টির জন্য আপনি তৈরি!

আনুষঙ্গিক অনুষঙ্গ

পোশাকটা তেমন গর্জিয়াস না হলে সাজ ও ভারী গয়না পরুন আবার পোশাকটি গর্জিয়াস হলে সাজ ও গয়নার দিকে বেশি মনোযোগ না দিলেও চলবে। অনুষঙ্গে পরিবর্তন আনতে এখন অ্যান্টিক আর রুপার গয়নার দিকে অনেকে ঝুঁকছেন। এ ক্ষেত্রে কখনো সরাসরি রুপার ব্যবহার, কখনো আবার ধাতবের ওপর রুপালি রঙের প্লেটিং করে গয়না তৈরি হচ্ছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে পরার জন্য সীতাহার, নেকলেস, লহর চেইন থেকে শুরু করে সবকিছুই এই উপাদানে তৈরি হচ্ছে। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য যখন সিল্ক শাড়ি বেছে নিচ্ছেন তখন অনুষঙ্গ হিসেবে কিছু সতর্কতা প্রয়োজন। যেমন- একরঙা জমিন, কনট্রাস্ট পাড় বসানো সিল্ক শাড়ির সঙ্গে গয়না ও ব্লাউজ দুটোই জমকালো হওয়া চাই। সঙ্গে রুপার নকশায় মুক্তা বসানো গয়না পরতে পারেন। চুলটা খোলা রেখে নিচের দিকে হালকা কোঁকড়া করলেই পূর্ণ হবে সাজ। সাধারণত দিনের আমন্ত্রণে এই সাজটা ভালো দেখাবে। এদিকে বিয়েবাড়ির দাওয়াতে সিল্কের শাড়ির সঙ্গে উৎসবের আমেজ আনতে লহর দেওয়া রুপার চেইন বেছে নিতে পারেন। হাতে কয়েক গাছি রুপার বালা আর টেনে বাঁধা চুলে ফুলেল সাজ সবার মাঝেই আপনাকে করবে আলাদা। কোনো কোনো আমন্ত্রণে নকশি করা সিল্কের সঙ্গে খাঁটি রুপার গয়না বেশি মানাবে। এদিকে রাতের নিমন্ত্রণে উঁচু করে বাঁধা বা একেবারে টেনে ছেড়ে রাখা চুলটাও ভালো লাগবে। শাড়ি পরলে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। ওয়েস্টার্ন পোশাক বা লম্বা গাউন টাইপের পোশাক পরলে সামনের অংশের চুল হালকা পাফ করে ফুলিয়ে পেছনে ক্লিপ আটকিয়ে বাকি চুল খোলা রাখুন। হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নেইলপলিশ লাগান।

কেমন হবে মেকআপ

মেকআপের আগে ফেসওয়াশ লাগিয়ে মুখ ধুয়ে ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এরপর টোনার দিয়ে মুখ ভালো করে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে সহজেই মেকআপের বেইজ ত্বকে বসে যায়। লিকুইড ফাউন্ডেশন মুখ-ঘাড়-গলায় ভালো করে ব্লেন্ড করে লাগান। ফাউন্ডেশন দেওয়ার পরও মুখে সূক্ষ্ম রেখা বা দাগ থাকলে সে ক্ষেত্রে কনসিলার ব্যবহার করুন। ফেস পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশন বসিয়ে দিন। সবশেষে চোখের মেকআপ করুন। পোশাক ও তার রঙের ওপর নির্ভর করে মেকআপ করতে হবে। পোশাকের রঙে বা সম্পূর্ণ ভিন্নরঙা কনট্রাস্ট আই শ্যাডোর সঙ্গে গ্লিটার আই লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। নীল, সবুজ, সোনালি বা রুপালি যে কোনো রঙের আইলাইনারই ব্যবহার করুন। শীতের সাজে চোখের মেকআপটা গাঢ় হয়। এক্ষেত্রে গাঢ় মাশকারা আর কাজল ব্যবহার করুন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে ‘গ্লস’ শীতের জন্য বিশেষ উপকারী। দেখতেও সুন্দর আর ঠোঁটকে রাখে সুরক্ষিত। ন্যাচারাল, বাদামি পিচ অথবা গোলাপি লিপগ্লসে ঠোঁট হয় অনন্য। আবার রাতের সাজে ঠোঁটে গাঢ় রঙের লাল, মেরুন, গোলাপি বা বাদামি রঙের অয়েলি লিপস্টিক লাগাতে পারেন। পারলে লিপস্টিক চিকন তুলি দিয়ে লাগিয়ে নিন। ঠোঁটের শেপ অনেক শার্প লাগবে। ব্লাশন ব্যবহারের সময় একটু সতর্ক থাকুন, খেয়াল রাখুন সেটা যেন উগ্র না হয়। ব্লাশন লাগান চিকবোন বরাবর।

প্রয়োজনীয় টিপস

♦ মেকআপের আগে অবশ্যই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ক্লিনজিং মিল্ক লাগিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

♦ ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে টোনার দিয়ে মুখ ভালো করে মুছে নিন।

♦ লিকুইড ফাউন্ডেশন মুখ-ঘাড়-গলায় ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।

♦ ফাউন্ডেশন দেওয়ার পরও মুখে রেখা বা দাগ থাকলে কনসিলার ব্যবহার করুন। এরপর ফেস পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশনটা বসিয়ে দিন।

♦ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে আইশ্যাডো ও গ্লিটার দিন।

♦ গালের উঁচু হাড় বরাবর ব্লাশন লাগান। ব্লাশন ব্যবহারের সময় দৃষ্টিকটু যেন মনে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

♦ লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিতে হবে, তারপর লিপস্টিক লাগান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here