জাতীয় পার্টিতে উৎকণ্ঠা

0

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ায় জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা অস্বস্তি উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। এ অবস্থায় দলের শীর্ষ নেতারা বিশেষ করে দলের কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা নৌকা প্রতীকধারী আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে নারাজ। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো এবারও আসন সমঝোতা চান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক কো-চেয়ারম্যান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার মধ্যদিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোসহ নির্বাচনবিরোধী মানুষের শত্রু হয়েছি। এখন মাঠপর্যায়ে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের শত্রু হতে চাই না। সমঝোতা না হলে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।

২০০৮ সাল থেকে সবশেষ তিনটি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে নবম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি মহাজোট করেই অংশ নেয়। ২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনে দশম সংসদ নির্বাচনে জোট না হলেও আসন সমঝোতা হয় দুই দলে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এসব আসনেই জিতে আসেন লাঙ্গলের প্রার্থীরা। দীর্ঘসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ভোট করে আসা জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এককভাবে ২৮৭ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আর আওয়ামী লীগ দিয়েছে ২৯৮ আসনে। জানা যায়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে না থেকেও দলটির সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে চাচ্ছে জাতীয় পার্টি। এ জন্য গত বুধবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে জাপা কমবেশি ৭০টি আসনে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ আসনে সমঝোতা হলেই সন্তুষ্ট থাকবে দলটি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশানে প্রথমবারের মতো আলোচনায় বসে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ২০টির বেশি আসনে ছাড় নয় এমন প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনায় বসেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে দুই দলের মধ্যে।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টি তাদের বিজয়ী হওয়া বর্তমান ২৩ আসনে কোনো ছাড় দিতে চায় না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৭ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছিল। এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি বেশি আসন চাইছে। জাতীয় পার্টির নেতারা মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা ভোট বর্জন করলে নির্বাচন একেবারে একপেশে হয়ে যাবে। এ বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেও উদ্বেগ আছে। জাতীয় পার্টি এই উদ্বেগকে পুঁজি করে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর-কষাকষি করার সুযোগ নিয়েছে। তবে আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাড়া দেখা যায়নি বলে জানান জাপা নেতারা। এখন এসব বিষয় নিয়ে আজ-কালের মধ্যে আবার বৈঠক হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here