ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি (মোদি) নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে কংগ্রেসের সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে গুজরাটের একটি আদালত। এই মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯, ৫০০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। তবে পরক্ষণেই জামিন পেয়ে যান তিনি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। কর্নাটকের কোলার নামক জায়গায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে এক নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তব্য দিতে গিয়ে গোটা ‘মোদি’ সম্প্রদায়কে অবমাননা করার অভিযোগ ওঠে রাহুলের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করেই রাহুল বলেছিলেন ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘নিরব মোদি, লোলিত মোদি কিংবা নরেন্দ্র মোদি- যেই হোক না কেন, সব চোরদেরই পদবি মোদি হয় কীভাবে?
সেই মামলার রায় ছিল বৃহস্পতিবার। আদালত এদিন এই মামলায় প্রথমে রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে। এরপর দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়। আদালত জানায়, রাহুলের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী, তার সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যস্তরের অনেক কংগ্রেস নেতাও। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সুরাত আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয।
তবে কারাদণ্ডের পরেই ১৫ হাজার রুপির ব্যক্তিগত বন্ডে রাহুল জামিনও পেয়ে যান। সেক্ষেত্রে আগামী ৩০ দিন সাজা কার্যকর স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন বিচারক এইচএইচ বর্মা। এই সময়সীমার মধ্যে তিনি নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যেতে পারবেন।
এদিকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেই টুইটারে রাহুল গান্ধী লেখেন ‘সত্য এবং অহিংসাই আমার পরম ধর্ম। সত্য আমার ঈশ্বর। অহিংসার মাধ্যমেই সত্য উপলব্ধি সম্ভব- মহাত্মা গান্ধী’।
সুরাতের আদালতের রায় শোনার পরই গুজরাট থেকে এদিন সন্ধ্যায় দিল্লি এসে পৌঁছান রাহুল গান্ধী। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাহুলকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন দলের অসংখ্য কর্মী সমর্থকরা।
এদিকে সুরাতের আদালতে রাহুলের কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণার পরেই দেশের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয় কংগ্রেস কর্মী, সমর্থকরা। রায়ের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টির মতো বিজেপি বিরোধী দলগুলোও।