যুদ্ধবিরতির শেষ দিন আজ, ফের নৃশংস হামলায় পতিত হবে গাজা?

0

আজ সোমববার ফিলিস্তিনের গাজায় চলছে যুদ্ধবিরতির চতুর্থ দিন। চুক্তি অনুযায়ী, গাজায় এই চার দিন ধরে ইসরায়েলি অভিযান বন্ধ রয়েছে। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতির পর সেখানে কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন এখন সবার। আবারও কি যুদ্ধ শুরু হবে, নাকি যুদ্ধবিরতি আরও দীর্ঘ হবে? আসবে কি কোনও সমাধানের পথ? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসির সাংবাদিকরা।

সাংবাদিকরা জানান, এক কথায় এটি অনেকটা নির্ভর করছে হামাস কতজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে, তার ওপর। তবে ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন্দি বিনিময় শেষ হলে গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণের জন্য যুদ্ধ আবার শুরু হবে। এটা আরও এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

তিনি বলেছিলেন, “হামাস যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল।”

ধারণা করা হয়, সশস্ত্র গোষ্ঠীটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা ইয়াহা সিনওয়ার ও মোহাম্মদ দেইফ হাজার হাজার যোদ্ধা ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ইসরায়েলি জিম্মিদের নিয়ে গাজার দক্ষিণে আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে জিম্মিদের উদ্ধার ও হামাস নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল যদি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হবে।

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে গাজা উপত্যকার প্রায় ২২ লাখ মানুষ এখন দক্ষিণের দুই-তৃতীয়াংশে প্রবেশ করেছে। তাদের অনেকে গৃহহীন ও আঘাতপ্রাপ্ত। অনেকের শঙ্কা সামনের দিনে আরও মানবিক বিপর্যয় আসতে যাচ্ছে গাজায়।

ইউএন রিলিফ এজেন্সি ফর প্যালেস্টানিয়ান-এর মতে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকার প্রায় ১৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগ দক্ষিণের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে গাজায়। হাজার হাজার মানুষ স্কুল, হাসপাতাল ও তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। শীতের শুরুতে বৃষ্টির কারণে এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে।

বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আল মাওয়াসিতে একটি ‘নিরাপদ এলাকা’ প্রস্তাব করে সমাধানের কথা বলছেন। যেটি মিশরীয় সীমান্তের কাছাকাছি ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল বরাবর কৃষিজমির একটি সরু উপত্যকা। সেখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, রাফাহ ক্রসিং থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে আল মাওয়াসিতে সাহায্য পৌঁছানোটা সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভর করছে।

এছাড়া মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলের সঙ্গে অতিরিক্ত নিরাপদ এলাকা নিয়ে আলোচনা করছেন বলে জানা গেছে। এটি সম্ভবত গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তের দাহনিয়া এলাকা।

তবে জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থা ও এনজিওগুলোর প্রধানদের এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে ‘বিপর্যয়ের একটি পন্থা’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে চারদিনের যুদ্ধবিরতির প্রায় শেষের দিকে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বন্দি বিনিময়ও হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় শেষ হবে যুদ্ধবিরতি। এরপর গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আবার শুরু করা হবে কিনা, তা নিয়ে ইসরায়েলি নেতারা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here