মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনের মধ্যে ইসরা জাবিস বেশ পরিচিত মুখ। তার মূল কারণ, ২০১৫ সালে জেরুজালেমের একটি চেকপয়েন্টে তার গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তিনি ‘তৃতীয়-ডিগ্রি দগ্ধ’ হন। পুড়ে তার শরীরের মুখ ও হাত-সহ ৬০ শতাংশ অংশ। পরবর্তীতে চিকিৎসার সময় তার দুই হাতের আটটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়।
কিন্তু কেন ঘটে ওই বিস্ফোরণ?
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তার গাড়িরর সিলিন্ডারটির বিস্ফোরণ ঘটে। ওই ঘটনায় ইসরায়েলি একজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। এতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ইসরায়েল। এতে তার ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়।
গণাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ওই ঘটনার পর তিনি গাড়ির জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। তবে ইসরায়েলি একজন সেনা কর্মকর্তা তাকে দিকে বন্দুক তাক করে এগিয়ে আসেন এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে, দীর্ঘ আট বছর পর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েও খুশি নন ইসরা জাবিস।
তিনি বলেন, “আজ ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতবিক্ষত গোটা ফিলিস্তিন। তাই মুক্তি পেয়েও খুশি হতে পারছি না। আমার মতো বাকিরাও মুক্তি পাক, সেটাই চাই।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরপর ২৮ অক্টোবর থেকে সেখানে স্থল হামলাও শুরু করে ইহুদিবাদী দেশটি। এতে ১৪ হাজার আটশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি।
এই পরিস্থিতি গত শুক্রবার থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী চলছে বন্দি বিনিময়। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিশর এবং আমেরিকার তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার ১৩ ইসরায়েলি-সহ ২৪ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তার পরিবর্তে ৩৩ শিশু এবং ছয় নারী-সহ ৩৯ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার ১৩ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। অন্য দিকে, ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ৪২ জন ফিলিস্তিনিকে। যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন রবিবার ১৩ ইসরায়েলি ও চার বিদেশি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলেও ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে।
সোমবার যুদ্ধবিরতির চতুর্থ দিন চলছে। চুক্তি অনুযায়ী, চার দিনে মোট ৫০ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দেবে হামাস। আর ইসরায়েল কারাগার থেকে মুক্তি দেবে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে। সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি, এনডিটিভি, প্যালেস্টাইন ক্রনিকল