জামাইদের নিয়ে বসেছে নবান্নের মাছের মেলা

0

জামাইদের নিয়ে বসেছে নবান্নের মাছের মেলা

সারি সারি দোকানে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বিগ্রেড, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। চলছে হাঁকডাক ও দরদাম। এক কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের মাছ। লোকজনও উৎসাহ নিয়ে দেখছেন, কেউবা কিনছেন। 

আজ শনিবার নবান্ন উৎসব ঘিরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে দিনব্যাপী বসেছে মাছের মেলা।

এই অগ্রহায়ণে মাঠ থেকে কৃষকদের ঘরে নতুন ফসল উঠলেই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন উপজেলার সকল কৃষকেরা। আর এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর এখানে বসে মাছের মেলা। মেলায় অংশ নেয় উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জ, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মানুষ। এই উৎসবে প্রতি বাড়িতে মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়। জামাইদের নিয়ে বসা হয় এই মেলায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ মেলায় আসেন।

মেলায় বিশালাকৃতির একটি মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাই পৌর সভার আকন্দ পাড়া মহল্লার মাছ বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম। তিনি ২০ কেজি ওজনের সিলভার মাছটির দাম হাঁকেন ১৬ হাজার টাকা। ২৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিগ্রেড ও সিলভার কার্প মাছ বেশি বিক্রি হয়েছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে।

কথা হয় ক্রেতা সাবরিনা ইয়াসমিন এশা, আনিছুর রহমান, মুনিষ চৌধুরী, মোস্তাক রহমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে, কিন্তু দাম অনেকটা বেশি। 

মাছ ব্যবসায়ী লেবু সরদার, আব্দুল কুদ্দুস মহন্ত মালী জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচাকেনা সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু বেচাকেনা হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ টিকবে।

মেলার জন্য এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেছেন চাষি নাহিদ চৌধুরী। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছেন বলে জানান তিনি।

মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা জানান, বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা প্রশান্তি আসে।

মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ময়েন উদ্দিন জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও নওগাঁ, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মাছ ব্যবসায়ী মাছ নিয়ে এসেছেন এই মেলায়। মাছের সরবরাহ বেশ ভালো।

কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘দেশীয় জাতের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে এসব মাছ চাষ করায় এই জাতগুলো আবার ফিরে এসেছে। আমরা অতিথিপরায়ণ জাতি। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়দের মধ্যে পারস্পরিক মিলনমেলার সুযোগ ঘটে, এটা ভালো দিক।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here