ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে পটুয়াখালীতে ধানসহ রবি ফসলের অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। সম্পূর্ণ এবং আংশিক শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রোপা আমনের মাঠে পানি জমে গেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাতে আমনসহ সব ফসল মিলিয়ে মোট ৬০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবে কৃষকরা।
পটুয়াখালী কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৮ উপজেলার প্রায় অনেক জমির রোপা আমন ও ইরি ফসল বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। মাটির উপর পরে গেছে আমন ধান। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় শীতের আগাম সবজিও ক্ষতির মুখে পরেছে।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পটুয়াখালীতে এখন মাঠে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ১১৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান রয়েছে। এর মধ্যে পাকা, আধাপাকা এবং ফুল অবস্থায় রয়েছে। এর থেকে আনুমানিক ১০-১২ ভাগ ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বাতাসে মাটিতে শুয়ে পরেছে। এর উল্লেখযোগ্য অংশের উৎপাদনে ফলন কমে যাবে, অপুষ্ট ধান হবে, চিটা হবে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এর মধ্যে আনুমানিক ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। রবি সবজি ২৫ হেক্টর ও সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে খেসারি ডাল রয়েছে যা পানিতে পচে যাবে। আমাদের মাঠ কর্মিরা কৃষকদের কাছে গিয়ে পরমর্শ দিচ্ছেন পানি যাতে দ্রুত সেচ করে জমি পরিস্কার করে। তাহলে কিছুটা ক্ষতি কমে যাবে। সব মিলিয়ে অন্তত ৬০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকরা।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ জানান, সদর উপজেলার বোতলবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনের কাচা ঘর পরে গিয়ে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়াও রাঙ্গাবালীতে ৬টি কাচা ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্থ হয়েছে। জেলায় মোট ১৩৩টি কাচা ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দশমিনায় ৭৫টি, রাঙ্গাবালী ২৬টি, মির্জাগঞ্জে ১৯টি, দুমকিতে ৯টি, কলাপাড়ায় ২টি, বাউফল ও সদর উপজেলা ১টি করে মোট ২টি। এছাড়া গাছপালা উপরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তালিকা হাতে পেলে পরিমান বলা যাবে।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সূখী জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পযন্ত ২০৭ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।