জিম্মি উদ্ধারে ৪১ দিনেও ব্যর্থ ইসরায়েল, এখন আমেরিকার তোড়জোড় শুরু

0

দীর্ঘ ৪১ দিন নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়েও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস যোদ্ধাদের হাতে বন্দি জিম্মিদের উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। এখন অনুনয় বিনয় শুরু করেছে আমেরিকা।

এরই অংশ হিসেবে কাতারের আমিরের শরণাপন্ন হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের সঙ্গে কাতারের যোগাযোগ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বন্দি মুক্তির আলোচনায় কাতার মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেছে।

হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্ত করার জন্য বাইডেন এমন সময় কাতারের শরণাপন্ন হলেন যখন ইহুদিবাদী ইসরায়েল ৪১ দিন ধরে আমেরিকার কাছ থেকে পাওয়া সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ২৪ ঘণ্টা গাজাবাসীর ওপর বর্বরতা চালিয়েছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর গলায় বলে এসেছেন, হামাসকে নির্মূল করে বন্দিদের মুক্ত করার আগে তিনি থামবেন না।

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকো সফররত বাইডেন শুক্রবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানিকে টেলিফোন করেন। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই ফোনালাপে বাইডেন শেখ হামাদের সঙ্গে অবিলম্বে হামাসের হাতে আটক বন্দিদের নিরাপদ মুক্তি নিয়ে কথা বলেন। বাইডেন বলেন, “বন্দি মুক্তির বিষয়টি এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।”

এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইসরায়েল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন দুই ট্যাংকার জ্বালানি সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে। 

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র বলেন, জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি গাজায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে দুই নেতা আলোচনা করেন। তারা কাতার ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিতশালী করার উপায় নিয়েও কথা বলেন।

হামাস যোদ্ধারা গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে বড় ধরনের অভিযান চালান এবং তারা অন্তত ২৪০ জন ইসরায়েলিকে বন্দি করে গাজায় ফিরে যান। পরে জানা যায়, এসব বন্দির মধ্যে ১০ মার্কিন নাগরিকসহ আরো বিভিন্ন দেশের কয়েকজন নাগরিক রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন সময় হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি দাবি করলেন যখন এ ব্যাপারে হামাসের সামরিক বাহিনী আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা গত ৭ নভেম্বর ইসরায়েলের সঙ্গে বন্দি বিনিময় করতে হামাসের প্রস্তুতি ঘোষণা করেছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে হামাসের পক্ষ থেকে শর্ত আরোপ করেছিলেন যা এখনও বহাল রয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েলি কারাগারে যেমন ফিলিস্তিনি নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে তেমনি হামাসের কাছেও ইসরায়েলি নারী, শিশু ও বৃদ্ধ বন্দি রয়েছে। হামাসের হাতে আটক যেকোনো ধরনের বন্দিকে মুক্ত করতে হলে ইসরায়েলের হাতে আটক একই ধরনের বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। আবু ওবায়দা বলেছিলেন, তাদের হাতে আটক ইসরায়েলি সেনাদের মুক্ত করতে হলেও ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মুক্তি দিতে হবে।

ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুরু থেকে বলে আসছেন, গাজায় আটক সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো যুদ্ধবিরতি মানবেন না। এ প্রসঙ্গে আবু ওবায়দা প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করে নেওয়ার একটিই উপায় আছে আর তা হচ্ছে বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া। তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here