চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। গত ৭ অক্টোবর থেকে সেখানে নির্বিচারে বোমা হামলা ও ২৮ অক্টোবর থেকে স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এরই মধ্যে ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় সেখানে নিহত হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে আট হাজারের বেশি নারী ও শিশু।
এদিকে, ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসনে আহত হয়েছে আরো বহু সংখ্যক মানুষ। কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য সামান্য চিকিৎসাটুকুও পাচ্ছে না। কেননা, ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমা হামলায় অবরুদ্ধ ওই উপত্যকার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ২৬টির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
হাসপাতালে জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে জেনারেটর। যে কারণে সেখানে আইসিইউ ও ইনকিউবেটরে থাকা শিশু এবং রোগীরা প্রাণহানির শঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন শিশু ও রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।
আর গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের হামলায় আল-শিফা হাসপাতালের একাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় উপত্যকায় অসুস্থ ও আহত লোকজনের চিকিৎসাসেবায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত ইসরায়েলি সৈন্য আল-শিফা হাসপাতালের প্রত্যেকটি বিভাগে তল্লাশি শুরু করছে। হাসপাতাল ভবনের দক্ষিণের একটি অংশ ইসরায়েলি বুলডোজার গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি সৈন্যদের তল্লাশি চালানোর তথ্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা। হাসপাতালের ভেতরে অবস্থানরত চিকিৎসক ও রোগীরা সেখানে হামাসের উপস্থিতির তথ্য অস্বীকার করেছেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, এবার গাজা উপত্যকার আল-আহলি আরব হাসপাতাল ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি ট্যাংক। রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা আহতদের কাছে পৌঁছাতে এবং চিকিৎসাসেবা দিতে পারছেন না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ২৬টি আর চালু নেই। এছাড়া বাকি ৯টি হাসপাতালে কেবল আংশিকভাবে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে বুধবার গাজায় হামাসের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, উপত্যকার ২৫টি হাসপাতাল আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স