লক্ষ্মীপুরে ৬০০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন

0

সুপারিতে খ্যাত হিসেবে পরিচিত জেলা গুলোর মধ্যে লক্ষ্মীপুর অন্যতম। জেলায় ছোট-বড় বাগান মিলে ৭ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় লাভজনক অর্থকরী এ পণ্য ঘিরে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। এবার মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুপারি আকারে ছোট হয়েছে। ফলন হয়েছে বেশ তবে দাম অন্য বারের তুলনায় কিছুটা কম বলছেন চাষীরা। এতে করে তাদের মাঝে লোকসানের আশঙ্কাই বেশি। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানকার উৎপাদিত সুপারী বেশি সুস্বাদু হওয়ায় জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও বিক্রী হচ্ছে। এতে করে এ এলাকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় দারুন ভূমিকা রাখছে সুপারি। এবছর সুপারির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গেলো বছর জেলায় সুপারি উৎপাদন হয়েছে ৬৪ হাজার ৭শ’ ৫০টন। চলতি বছর ৭ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার টন। যার বাজার মূল্য বর্তমানে ৬শ কোটি টাকারও বেশী। সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সুপারি উৎপাদন হয়। এখানে উৎপাদিত সুপারিগুলো ভিজিয়ে ও শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। যা সারাবছর ধরে বেচা-বিক্রি হয় বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, সুপারি উৎপাদনে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই এ অঞ্চলের মানুষ নতুন নতুন সুপারি বাগান তৈরিতে ঝুঁকছেন। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সুপারির হাটগুলো জমজমাট থাকে। চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বেপারিরা সুপারি কিনছেন এখানকার হাটগুলো থেকে। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুপারির আকার কিছুটা ছোট হলেও ফলন হয়েছে বেশি। তবে গেলো বছরের চেয়ে দাম কম পাওয়ায় অনেকটায় হতাশার কথা জানান ।

সুপারি চাষের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা জানায়, সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছ থেকে সুপারী সংগ্রহ করা হয়। সুপারী বাগানের এক গাছে উঠে অন্য গাছে যেতে হয়। আবহাওয়া ভাল থাকলে এভাবে প্রায় প্রতিদিনই ১৪-১৫শ গাছ থেকে সুপারী সংগ্রহ করেন প্রত্যেক শ্রমিক। এতে প্রতিদিন আয় হয় ৭০০-৮০০ টাকা।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মোহাম্মদ রেজাউল করিম ভূঁঞা বলেন, সুপারি চাষ, পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে চাষীদের কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এ জেলায় সুপারি চাষ লাভজনক হওয়ায় সুপারিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার পরামর্শ এ কর্মকর্তা।
বেশি বেশি সুপারি গাছ রোপন, রক্ষণা-বেক্ষণ, কৃষক ও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্টাই উৎপাদিত সুপারি জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here