উজানের ঢল ও টানা বর্ষণের ফলে উত্তরের জেলা গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধিতে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় পানি বৃদ্ধি হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন নদী তীরের বাসিন্দারা।
উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের বোচাগাড়ী গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, কাল রাত থেকে পানি বাড়তেছে। শুনছি পানি আরও বাড়বে। পানি বাড়লে আমন ধানসহ সবজি ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হবে।
ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষক আয়নাল হক বলেন, রাত থেকে পানি উপরের দিকে উঠতেছে। পানি বাড়ালে তো নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। গত কয়েকদিন আগে পানি বাড়লেও তা নেমে গেছে। তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগাইছি এবার মনে হয় ফসল আর ঘরে উঠাতে পারবো না।
চন্ডিপুর উনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী মোস্তফা মাসুম বলেন, নদীপাড়ের বাসিন্দাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ের যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদেও মাইকিং চলছে। কেউ কেউ নিরাপদ স্থানে সরে গেলেও যারা এখনও আছেন তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যেতে বলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উজানের পানি তিস্তা নদী দিয়ে দ্রুত নেমে আসছে। এজন্য জরুরি কনেন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সম্ভাব্য বন্যা থেকে তিস্তা পাড়ের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, উজানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তায় পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।