চার শতাধিক বছরের পুরনো নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম নারী-মুসলমান কাউন্সিলওম্যান হিসেবে নির্বাচিত হবার পর থেকেই শাহানা হানিফ বিশ্বের রাজধানী খ্যাত এই সিটির ইতিহাসে নবতর অধ্যায়ের সংযোজন ঘটাচ্ছেন একের পর এক।
২১ ফেব্রুয়ারির স্বীকৃতির পর ২৬ মার্চকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের স্বীকৃতির পাশাপাশি পবিত্র রমজান মাসেরও বিশেষ স্বীকৃতি আদায়ের রেজ্যুলেশন (৫১৫)পাস হলো ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার।
এই রেজ্যুলেশন পাশে নেপথ্য থেকে উৎসাহিত করেছেন ‘সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ফান্ড ফর স্কলারশিপ এ্যান্ড ট্রেনিং’ তথা স্যাফেস্ট’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান মাজেদা এ উদ্দিন। রেজ্যুলেশনটি পাশের সময় আরো কজনের সাথে মাজেদাও ছিলেন সিটি কাউন্সিলের ফ্লোরে।
রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোকে এই রেজ্যুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বের ১.৮ বিলিয়ন মানুষ হচ্ছে মুসলমান এবং তারা সকলেই এ মাসে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত থাকেন। ২০২৩ সালের বিশ্বের জনসংখ্যার গতি-প্রকৃতি রিপোর্ট অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ের ২৫% কৃষ্ণাঙ্গ, ২৪% শ্বেতাঙ্গ, ১৮% বাংলাদেশীসহ এশিয়ান, ১৮% আরব এবং ৫% হিসপ্যানিক এবং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠি ৭%।
‘মুসলিম ফর আমেরিকান’র ২০১৬ সালের ড্যাটা অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটিতে মুসলমানের সংখ্যা হচ্ছে ৭ লাখ ৬৫ হাজার অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৯%। এই সিটির ৯৫ হাজার ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক মুসলমানেরা। আরো বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি শিক্ষা বিভাগ ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার দিনকে ছুটি ঘোষণা করেছে ২০১৫ সালে।
এছাড়া, সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট বাইডেনও পবিত্র রমজান এবং ঈদ উপলক্ষে মুসলিম সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দিচ্ছেন অর্থাৎ মুসলিম সম্প্রদায় হচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি তথা যুক্তরাষ্ট্রের বহুধর্মের বর্ণাঢ্য বৈশিষ্টকে উদ্ভাসিত করার অন্যতম একটি অবলম্বন। আর রমজান মাসে মুসলমানেরা সংযমী হবার পাশাপাশি নিকট প্রতিবেশী দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ান। আর্ত-মানবতার অনন্য এক উদাহরণে পরিণত হন। এমন একটি পবিত্র মাসের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাতে পেরে সিটি কাউন্সিলও আনন্দিত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বহুজাতিক এ সমাজে যথাযথভাবে উদযাপন এবং পবিত্র রমজানের মাহাত্ম ও গুরুত্ব অনুধাবন করে সেই মাসটির স্বীকৃতি প্রদানের জন্যে এই রেজ্যুলেশন উত্থাপনকারি কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ এবং নান্তাশা উইলিয়ামসের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর যুক্তরাষ্ট্র চ্যাপ্টারের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. খন্দকার মনসুর ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, স্যাফেস্ট’র প্রধান নির্বাহী মাজেদা এ উদ্দিন, অগানাইজার ফরিদা শিরিন খান, নাসরিন ফৌজিয়া, তাহমিনা উর্মি, বেবী আকতার, ফেরদৌস মজুমদার, এম বি হুসেন, আকতার রহমান রহমান প্রমুখ।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে এবার স্বাধীনতা দিবসে সিটি হলের সামনে পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সিটি হলে সমাবেশ হবে বলে সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ।