গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধায় করতোয়া নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ২টি গুচ্ছগ্রামসহ ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলার কাটাখালি নদীর রাখাল বুরুজ ইউনিয়নের বিশপখইর ও মহিমগঞ্জের বোচাদহ এলাকাসহ তিন-চারটি পয়েন্টে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এসব এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্যমতে শুক্রবার বেলা ৩টায় করতোয়া নদীর পানি চকরহিমাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ সেন্টিমিটার।
স্থানীয়দের দাবি ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। তারা অভিযোগ করেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত বাঁধটি ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যার সময় আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কিছু বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হলেও স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিবছর স্থানীয় মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে নিস্ব হচ্ছে।
অন্যদিকে পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া ও আখিরা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের পশ্চিম পাশের এলাকা এই দুই নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার ১৭টি গ্রামের আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন রবিশস্য পানি উঠতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে আউশ ধান, বাধ্য হয়ে তলিয়ে থাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে কৃষকরা।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক হাফিজ বলেন, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি উপজেলার কয়েকটি পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপজেলার বিষপুকুর, বালুয়া, বোচাদহ ও পলাশবাড়ির কিসামত চেরেঙ্গা পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন পরিস্থিতি রোধ করা হচ্ছে।