কম খরচ ও লাভ বেশি হওয়ায় সাধারণ নিয়মের বাইরে বস্তায় আদা চাষে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দিনাজপুরের সদর, ঘোড়াঘাট, চিরিরবন্দর, খানসামা, কাহারোলসহ বিভিন্ন উপজেলায় বস্তায় আদা চাষ দিন দিন বাড়ছে।
সাধারণ নিয়মের বাইরে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই। বস্তায় আদা চাষে মাটি নরম থাকে, ঘাস কম হয়, পরিচর্যা সহজ হয়, কীটনাশক কম লাগে, বর্ষা মৌসুমে পানি জমে না, স্যাঁতসেঁতে হয় না, ছত্রাক ও রোগ-বালাই কম হয়, আদা পঁচে না। গাছও হৃষ্টপুষ্ট হয়। বীজ লাগানোর সময় মাটি শোধন করে নিলে আদার কন্দ পঁচা রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। ফলে আদার ফলন বেশি হয় ও কৃষক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কৃষি বিভাগ জানায়, আদা প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন। আদা লাগানোর ৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে উত্তোলন করা যায়। একটি বস্তায় ৩০ গ্রাম করে ৩টি আদার বীজ রোপণ করে প্রায় ২ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।
আদা চাষ করে সফল চিরিরবন্দরের বৈকুন্ঠপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান সরকার। তিনি গত বছর পরীক্ষামূলক বাড়ির আঙ্গিনায় বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তিনি এবছর তাঁর গ্রামের পতিত জমি ও গাছতলায় ১ হাজার ২শ’ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। আদা চাষে বস্তা প্রতি সার ও মাটি ভরাট করতে খরচ পড়েছে মাত্র ২০ টাকা। গত বছর পরীক্ষামূলক বাড়ির আঙ্গিনায় বস্তায় আদা চাষ করে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি আয় হবে বলে তিনি আশা করছেন।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, এটি একটি বিকল্প পদ্ধতি। যেখানে মাটি ভালো নেই, কিংবা সংকট রয়েছে, সেখানে এটি কার্যকর। অনেকে এখন ছাদে বস্তায় ভরে আদা চাষ করছেন। যাদের চাষাবাদের জমি নেই, তাদের বাড়ির অব্যবহৃত জায়গায় বা বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে অল্প খরচে চাষি বেশি লাভবান হতে পারছেন।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রফিকুজ্জামান জানান, কুলানন্দপুর সিআইজি কৃষক দলের সদস্যরা স্ব-উদ্যোগে ১ হাজার ৬শ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কারিগরি পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়াও পরিত্যক্ত জমি ও বসত বাড়ির উঠানে আরও ৫ হেক্টর জমিতে আদার চাষ করেছে।