তিস্তার পানি কমে লালমনিরহাটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পানি কমলেও বানভাসী মানুষের ভোগান্তি কমেনি। চরের রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে চরের নিম্নাঞ্চলে বসবাস করা পরিবারগুলো ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। এদিকে ডুবে যাওয়া আমন ক্ষেত থেকে পানি সরে গেলেও কৃষকদের দুশ্চিন্তা কাটছে না।
রবিবার বিকেল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে শনিবার সকাল ৬টায় তিস্তা পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর দিন বাড়ার সাথে সাথে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে।
এদিকে চর এলাকা ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। তবে এখনো কিছু বাড়ি ঘরে পানি রয়েছে। জেগে উঠা রাস্তায় জমে আছে কাদা মাটি। ফলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। কিছুটা উঁচু বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও ঘরে বাইরে জমে আছে কাদা মাটি। ফলে তাদের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় এমন ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে পানি নামতে শুরু করেছে। কিছু কিছু এলাকায় পানিতে ডুবে রয়েছে এমন ক্ষেত। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিস্তা পাড়ের কৃষকরা। হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ গুড্ডিমারি গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, দুইদিন থেকে পানিতে ডুবে ছিল আমন ক্ষেত। কিছু ধান গাছ পচন ধরেছে। এখন ক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে অত্র ইউনিয়নের প্রায় ১০ টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পরিবারগুলোর তালিকা নির্বাহী অফিসে জমা দিয়েছি। পাশাপাশি বন্যার্ত পরিবারের জন্য তিন টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি আগামীকাল তা বিতরণ করা হবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান মন্ডল বাদল বলেন, ইউনিয়নের তীরবর্তী এলাকায় অনেক ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। এর মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় পানি নেমে গেছে। পরিবারগুলোর শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি। ত্রাণ সহযোগিতা পেলে দ্রুত বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, বন্যার্ত পরিবারের জন্য তিস্তা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে ২০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা পর্যায় ক্রমে বিতরণ হবে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল কম আসায় দ্রুত কমেছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি শুরু করেছে।