কুমিল্লার দেবিদ্বারে আউশ মৌসুমের নতুন জাত ব্রি ধান৯৮ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। এ বছর ১০৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে জাতটি। ব্রি ধান৯৮ সম্প্রসারণের ফলে প্রায় ৯৪১ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রমতে, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি, এনএটিপি-২ ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প ও রাজস্ব খাতের প্রদর্শনী বাস্তবায়নে প্রাধাণ্য দেয়া হয়েছে ব্রি ধান৯৮ জাতটি। এতে কৃষক পর্যায়ে পর্যাপ্ত বীজ সংরক্ষণ সম্ভব হবে, যা আগামী বছর জাতটির বিস্তারে ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া বিএডিসি বীজ ডিলারদের ১ টন করে বীজ উত্তোলনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। মৌসুম শেষে ধান ঘরে উঠতে শুরু করেছে। বিঘা প্রতি ফলন পাওয়া যাচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মণ।
মোহনপুর ইউনিয়নের কৃষক গোলাম মোস্তাফা, আব্দুস সামাদ, আবুল কালাম প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন ব্রি ধান৯৮ জাতটি। প্রচলিত সকল জাতের থেকে ফলনের বেশি ও আকার আকৃতিতে চিকন হওয়ায় বেশ খুশি তারা। ধান চিকন হওয়ায় দামেও সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানান তারা। ব্রি ধান৪৮ এর চেয়ে অন্তত মণ প্রতি ধানের মান ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি পাওয়া যাবে।
মোহনপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. সুলতান আহম্মেদ জানান, এর আগে মোহনপুর ইউনিয়নে ব্রি ধান৯৮ চাষ হয়নি। মৌসুমের শুরুতে আউশ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জাতটি নিয়ে কাজ শুরু করি। মোহনপুর ইউনিয়নে আউশের জমি বৃদ্ধির সুযোগ নাই, তাই জাত পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়েছি। প্রথম দিকে প্রচণ্ড খরা আর তাপদাহে কৃষকেরা কিছুটা হতাশ ছিলেন, তবে সেচের ব্যবস্থা হতেই ধানের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, ২০২১ সাল থেকে ব্রি ধান৯৮ জাতটি সম্পর্কে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জাত পরিবর্তনের মাধ্যমে আউশের ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেবিদ্বার উপজেলায় যোগদানের পরই কাজ শুরু করি। প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে উপসহকারী কৃষি অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন। নতুন করে ২৩৭ হেক্টর জমি আউশের আওতায় এসেছে। আগামীতে ব্রি ধান৯৮ আউশ মৌসুমের মেগা ভ্যারাইটি হতে যাচ্ছে।