‘সমলয়’ পদ্ধতিতে ধান চাষ: কমবে খরচে বাড়বে আয়!

0

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পাল্টে যাচ্ছে কৃষির চিত্র। কৃষি কাজে আমূল পরিবর্তন এনেছে কৃষি যন্ত্রপাতি। কৃষককূলে বাড়ছে এসব যন্ত্রের ব্যবহার। শ্রমিক সংকট নিরসন, সময় অপচয়রোধ ও অতিরিক্ত খরচ কমাতে শুরু হয়েছে অধুনিক পদ্ধতি ‘সমলয়’-এ চাষাবাদ। এ পদ্ধতিতে কৃষকরা মাঠে এক সময়ে একযোগে একই জাত ধানের বীজতলা তৈরি, চারা রোপণ ও ধান কাটা মাড়াই-ঝাড়াই সবই যন্ত্রের মাধ্যমে করতে পারেন। এতে অল্প সময় ও অর্থ ব্যয়ে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অধিক লাভের।   

এ পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সম্প্রতি সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের (খরিপ-২/২০২২-২৩) আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে সিলেট সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁও এলাকায় রোপা আমন ধানের (উপশী জাতের) ‘সমলয়’ চাষাবাদ হচ্ছে ১শ ৫০ বিঘা জমিতে। গত বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরীন আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কৃষকরা। এ প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রের সাহায্যে কৃষদের ধানের বীজ থেকে শুরু করে বীজতলা তৈরি, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ এবং সর্বশেষ ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়ার কাজটিও করবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোছা. কামরুন নাহার জানান, বানাগাঁও গ্রামে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৫০জন কৃষককে ১৫০ বিঘা জমির জন্য ৫শ কেজি ব্রি-৯৫ জাতের বীজ ধানসহ উপকরণ দেয়া হয়। গেল ২৭ জুলাই ৪ হাজার বিশেষ ৪ ট্রে-তে বপন করা হয় বীজ। ২১ দিন বয়সি চারা আজ মূল জমিতে ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে রোপণ হচ্ছে। ১ বিঘা রোপণে ৪ জন শ্রমিকের ১ দিনের জায়গায় মেশিন রোপন করছে ২৫-৩০ মিনিটে। এ প্রকল্প ৭৫০ শ্রমিকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে করতে হতো।  ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে হওয়ায় ব্যয় হচ্ছে মাত্র ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রথমে কৃষকরা আগ্রহী না হলেও, পরে এর সুফল সম্পর্কে জেনে ও রোপণ দেখে অনেকেই যন্ত্র ক্রয়ে আগ্রহী হয়েছেন। 

এ বিষয়ে কথা হলে সিলেট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অর্পূব লাল সরকার ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, সমলয় চাষাবাদ হচ্ছে একই জাত, একই সময়ে একটি নির্দিষ্ট মাঠে যন্ত্রের সাহায্যে বীজ বপন, চারা পোরণ ও শস্য কর্তন। কৃষি ও কৃষকবান্ধব বর্তমান সরকার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন, এলাকাভেদে ৫০-৭০% ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেছেন। সমলয়ে চাষাবাদের ফলে কৃষি শ্রমিকের পরিবর্তে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে, স্বল্প পরিশ্রম ও স্বল্প খরচে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে। সমলয়ে চাষাবাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট কৃষির একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here