চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে আম সংরক্ষণের জন্য ৫ হাজার ৬’শ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হিমাগার স্থাপন করা হয়েছে। ফলে উত্তরবঙ্গের মধ্যে এই প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ি নামক স্থানে হিমাগার তৈরি হওয়ায় ব্যাপক উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাসিত আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, আজান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠিত হিমাগারটির আয়তন ২৮৮ শতাংশ। হট ওয়াশ চেম্বারের আয়তন ২০ শতাংশ, কোল্ড স্টোরেজ প্লান্টের আয়তন ১৩০ শতাংশ, চেম্বার সংখ্যা ছয়টি এবং পুকুরের আয়তন ৬৪ শতাংশ। হিমাগারটিতে ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এক মেট্রিক টন ফজলি, ক্ষীরসাপাত ও লক্ষণভোগ আম রেখে ২৮দিন পর বের করা হয়েছিল। তাতে সম্পূর্ণ আম অক্ষত ছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ৫’শ কেজি গাজর, ২’শ কেজি কাঁচা মরিচ ও ২’শ কেজি টমেটো রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে গাজর ২৮দিন পর ও কাঁচা মরিচ ও টমেটো ১৫ দিন পর বের করা হয়েছিল, যা অক্ষত অবস্থায় ছিল।
হিমাগারের ব্যবস্থাপক আবু নাইম জানান, জার্মানী প্রযুক্তিতে ফল সংরক্ষণের অত্যাধুনিক এই হিমাগারটিতে ফজলি, ল্যাংড়া, আশ্বিনা রুপালী ক্ষীরসাপাত, লখনাসহ বিভিন্ন জাতের ৪০ মেট্রিক টন আম রাখা হয় এবং পরবর্তী সময়ে আমগুলো বিক্রি করা হয়েছে। এতে লাভ তেমন না হলেও লোকসানও হয়নি। তবে বর্তমানে রুপালী, আশ্বিনা, ফজলিসহ কয়েক জাতের প্রায় পাঁচ টন আম আছে। যা সর্বোচ্চ ২৮দিন রাখা যাবে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে হিমাগারে আম রাখা হলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এখানে পোলিশ ও ছত্রাকনাশক ওয়াশ করা হয়। কিন্তু ওয়াশ ছাড়াও সংরক্ষণ করা যায়। তবে ছত্রাকনাশক ওয়াশে আমের রং ভালো থাকে। আম তিন ধাপে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। প্রথম ধাপে প্রি-কুলিং ১৬-২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ৬-৮ ঘণ্টা, দ্বিতীয় ধাপে কুলিং ২.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ও পোষ্ট কুলিং ১৬-২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ৬-৮ ঘণ্টা রাখতে হয়।
এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী হলেও অনেকেই আম সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতন নয়। তবে শিবগঞ্জে যে হিমাগার তৈরী করা হয়েছে তাতে অনেকের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি হলে আম চাষী ও আম ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আম রেখে কিছুদিন পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন।