বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ৬৭তম সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ

0

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দুর্গারামপুরে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ৬৭তম সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। 

সোমবার (৭ আগস্ট) বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক  ইমদাদুল হক মিলন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয় বলে আমার জানা নেই। মানুষের কল্যাণের জন্য এভাবে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করছে বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। মানুষের কল্যাণ হোক―এটাই বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের চিন্তাধারা।’ 

তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের এই ঋণ দিয়ে সচ্ছল করে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। অর্থনীতির মূলধারায় বরাবরই অবহেলিত ও পিছিয়ে থাকা সেই সব তৃণমূল মানুষকে সামনে নিয়ে আসতে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে সুদ ও সার্ভিজ চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ একটি মডেলের নাম।

সভাপতি ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। দেশের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন ক্রান্তিকালে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।
 
তিনি আরো বলেন, আজ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার ৩৪৪ জন হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত লোক বসুন্ধরা গ্রুপের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ পেয়ে ৩৩টি স্কিমের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। তিনি এর জন্য দোয়া চান, যাতে বসুন্ধরা গ্রুপ সকল অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত লোককে সেবা করতে পারে। 

আজ সোমবার ৪৩১ জন উপকারভোগীর মাঝে ৬৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৮৭ জন প্রত্যেকে ১৫ হাজার করে ২৮ লাখ পাঁচ হাজার, দ্বিতীয় ধাপে ২৪৪ জন প্রত্যেকে ১৫ হাজার করে ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এই ঋণ শুধু নারীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যা দিয়ে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল, শাক-সবজি চাষসহ ৩২ প্রকার কাজে নারীরা এই ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করে খুবই উপকার পাচ্ছে।

বাহেরচর গ্রামের নার্গিস আক্তার (৪০) বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার ঋণ পেয়ে দুইডা ছাগল কিন্না বর্তমানে বাড়তে বাড়তে প্রায় দুই লাখ টাকা ছাগল বেচ্চি। বসুন্ধরা আমারে তিনবার টেহা দিছে। বসুন্ধরার হগল মালিকগণের লাইগা দোয়া করি, আল্লায় যেন ভালো রাহে।’

কমুলপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী ফুল মালা (৪০) বলেন, ‘আমার জামাই মাছের ব্যবসা করে। আমি বসুন্ধরা রেইনের টেহাগুলি জামাইর হাতে দিয়া মাছের বেবসাত লাগাইছি। এখন আমরা লাভে আছি।’

দুর্গারামপুর গ্রামের রুপা (৩২) বলেন, ‘আমি এই টেহা নিয়া সেলাই মেশিন কিনছি। আমি এবং আমার মাদরাসায় পড়া মেয়ে সেলাই মেশিনটি চালাই। যা দিয়া আমার পরিবারের খাওনের চাহিদা মিডাইয়া মাইয়ার মাদরাসার পড়ালেহার খরচ জোগাই।’

২০০৫ সাল থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়মিত ঋণ দিয়ে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন। এই ঋণের পরিধি প্রথম দিকে শুধু বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা পার্শ্ববর্তী উপজেলা হোমনা ও নবীনগরে বিস্তার লাভ করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here