‘স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবে’

0

মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে বেআইনীভাবে টেক্সাসে বিদেশীদের আগমন ঠেকাতে টেক্সাস স্টেট পার্লামেন্টে ১০ মার্চ শুক্রবার একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে সীমান্ত অতিক্রমকারিদের ধর-পাকড়ের জন্য। স্থানীয় বাসিন্দারা পাবেন ধর-পাকড়ের এই ক্ষমতা। 

উল্লেখ্য, সীমান্ত সুরক্ষায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে সীমাহীন উদাসিনতার অভিযোগ করে আসছেন রিপাবলিকানরা। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী টেক্সাস, আরিজোনাসহ রিপাবলিকান অধ্যুষিত বেশ কটি স্টেটে গত দেড় বছরে লাখ লাখ বিদেশী ঢুকে পড়েছে বেআইনীভাবে। এত মানুষের ভার সইতে না পেরে এসব স্টেট প্রশাসন ঐসব বিদেশীদের বাসে উঠিয়ে নিউইয়র্ক, শিকাগো, বস্টন, ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠাচ্ছেন। অর্থাৎ ডেমক্র্যাট অধ্যুষিত সিটি ও স্টেট সমূহে চাপ প্রয়োগের অভিপ্রায়ে এমন কৌশল অবলম্বন করা হয় যাতে বাইডেন খুব দ্রুত একটি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হন। কিন্তু তবুও অভিবাসনের ভঙ্গুর অবস্থা দূর করা কিংবা সীমান্তকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার আওতায় আনতে ডেমক্র্যাটরা কোনই আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রিপাবলিকানদের। তার মনোভাব থেকেই টেক্সাস স্টেট হাউজে (হাউজ বিল ২০) উত্থাপন করেছেন রিপাবলিকানরা। টেক্সাস স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যাট শেফার উত্থাপিত বিলটি পাশ হলে ‘টেক্সাস বর্ডার প্রটেকশন ইউনিট’ গঠিত হবে এলাকার সিটিজেনদের সমন্বয়ে-যারা  অবৈধ অভিবাসীদেরকে গ্রেফতার, আটক করতে পারবে। তবে এমন কোন আচরণ করা যাবে না যাতে গ্রেফতারকালে কোন অবৈধ অভিবাসীর প্রাণহানী ঘটে। এই বিধির মাধ্যমে টেক্সাস স্টেট গভর্ণরকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হবে সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর পন্থা অবলম্বনের এবং এলাকাবাসীর সমন্বয়ে গঠিত ইউনিটের প্রতিটি সদস্যকে সম্মানী ভাতা প্রদানের। ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ‘ওপেন বর্ডার পলিসি’র প্রতিবাদে রিপাবলিকান অধ্যুষিত অপর স্টেটসমূহেও এমন পন্থা অবলম্বন করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 

এই বিল আইনে পরিণত হলে ঐ ইউনিটের চীফ, ডেপুটি চীফ, সহকারি চীফ থাকবেন সিটিজেনদের মধ্য থেকেই। আর দেখামাত্র গ্রেফতার অভিযান শুরুর আগে ইউনিটের সকল সদস্যকে স্বল্প সময়ের একটি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং স্টেট গভর্নর কর্তৃক গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রদান করা হবে। একইধরনের আরেকটি বিল (হাউজ বিল ৭) শুক্রবারই উত্থাপন করেছেন স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ রায়ান গুইলেন। এটি পাশ হলে গঠিত হবে ‘বর্ডার সেফটি ওভারসাইট কমিটি।’ এদের দায়িত্ব হবে ‘বর্ডার প্রটেকশন ইউনিট’র তদারকি করা। অর্থাৎ রিপাবলিকানরা সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে কোন ফাঁক-ফোকড় রাখতে চাচ্ছেন না। 

উল্লেখ্য, সীমান্তকে সত্যিকার অর্থে নিরাপদ করার অর্থ হবে সামনের নির্বাচনে বাইডেনের ভোট ব্যাংকে ধস নামা। এটাই প্রধান লক্ষ্য রিপাবলিকানদের। এই বিল দুটির কঠোর সমালোচনা করে টেক্সাস ডেমক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান গিলবার্তো হিনোজোসা বলেন, স্টেট পুলিশের দায়িত্বটি সাধারণ নাগরিকের হাতে অর্পণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা বুমেরাং হতে বাধ্য। অভিবাসীদের গড়া এই আমেরিকার মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থি আচরণে লিপ্ত হচ্ছেন রিপাবলিকানরা। নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে-যা কারো জন্যেই শুভ কিছু বয়ে আনবে না। এ ধরনের স্বৈরাচারি আচরণে গোটা সমাজে ভীতির সঞ্চার হবে। কারণ, স্থানীয় অধিবাসীরা গ্রেফতার ও আটকের ক্ষমতা পেলে যাকে খুশী তাকে হয়রানি, নাজেহাল, হেনস্থা করতে পারবে। অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হবার আগেই একজন অসহায় মানুষকে বিব্রতকর এবং অসহনীয় পরিস্থিতির ভিকটিম হতে হবে। 

টেক্সাস সিভিল রাইটস প্রজেক্ট’র প্রেসিডেন্ট রচেলা গারজা রিপাবলিকান শেফারের বিলের নিন্দা ও সমালোচনা করে বলেন, ফেডারেল আইনকে লংঘনের মত বিলই শুধু নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকেও চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কম্যুনিটির সম্প্রীতিকে ধ্বংসেরই নামান্তর হবে এমন বিধি তৈরি হলে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here