ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার ১৯৭০ সালের দিকে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তৈরি হতে পারে বলে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ সম্প্রতি কিছু গোপন নথি প্রকাশ করেছে যা থেকে জানা যায়, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের তিন বছর পর মেয়ার তার চিন্তার কথা প্রকাশ করেছিলেন।
গোল্ডা মেয়ার ছিলেন ইসরায়েলের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। চলতি আগস্টে তার জীবনী নিয়ে একটি চলচ্চিত্র বের হতে যাচ্ছে। ১৯৭০ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে দায়ান, শিক্ষামন্ত্রী ইগাল আলোনসহ ঊর্ধ্বতন অনেক মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সম্পর্কে গোল্ডা মেয়ারের দেয়া রূপরেখা
মেয়ার তার আলোচনার শুরুতেই বলেন, ‘ইসরায়েল তার স্বাধীনতা জন্য যুদ্ধ করার ফলে কিছু সুবিধা পেয়েছে। যেমন ফিলিস্তিনের সাথে যেকোনো চুক্তি করতে গেলে ইসরায়েলকে কম ছাড় দিতে হবে। এছাড়া জেরুজালেম ভবিষ্যত ফিলিস্তিনের রাজধানী হওয়ার বিষয়টি তারা নাকচ করে দিবে।’ সে সময়কার শ্রমমন্ত্রী গালিলি বলেন, একটা বিষয় আমি বুঝি আমরা যেটাকে ফিলিস্তিন সমস্যা বলি, যে সমস্যা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিভাবে মাথা ব্যথার কারণ, সেই সমস্যা আসলে নতুন করে সৃষ্ট কোনো সমস্যা না। এই সমস্যা আগে থেকেই এখানে ছিল।
আলোচনায় থাকা অন্যান্য মন্ত্রীরা ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্যাপারটা গ্রহণ করেছিলেন। তবে এ বিষয়ে তারা সতর্কভাবে আগানোর পক্ষে ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী আলোন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের এই বিষয়টিকে তুলনা করেন ১৯১৭ সালের বেলফার ঘোষণার সাথে, যার মাধ্যমে অটোমান শাসিত ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল গঠন করা হয়।
আলোন বলেন, ইসরায়েলি রাজনীতিকদের হাতে ফিলিস্তিনি জনগণের অস্তিত্ব নির্ভর করে না। তারা যদি নিজেদেরকে ফিলিস্তিনি হিসেবে পরিচয় দিতে চায় আর আমরা যদি হাজার বারও বলি তারা ফিলিস্তিনি না, তার পরও তারা ফিলিস্তিনিই থাকবে।
আলোন প্রধানমন্ত্রী মেয়ারের সাথে এই বলে দ্বিমত পোষণ করেন যে, ‘ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে উৎসাহ দিব না, বরং দীর্ঘমেয়াদী একটা শান্তিচুক্তি করার পক্ষে যার ফলে বিকল্প অপশনগুলোও খোলা থাকবে।’ সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট