ভারতের পথেই হাঁটল রাশিয়াও। চাল রফতানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শনিবার রুশ সরকার ঘোষণা করেছে, আপাতত কিছু দিনের জন্য তারা বিদেশে চাল রফতানি করবে না। অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারকেই।
রাশিয়া থেকে বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে চাল রফতানি করা হয়। রাশিয়ার চালের দিকে তাকিয়ে থাকে অনেক দেশ। পুতিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে সঙ্কটের আশঙ্কা করছে এই দেশগুলো।
চাল রফতানিতে রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা অবশ্য সাময়িক। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানি বন্ধ রাখা হবে। তারপর আবার বিভিন্ন দেশে চাল পাঠাবে রাশিয়া।
রুশ সরকার জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে স্থিতিশীল করতে চাল রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চালের সঙ্কট তাদের দেশেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই এই সিদ্ধান্ত।
জানা গেছে, ধানের ফলন কম হওয়ায় চাল উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে রাশিয়ায়। ফলে চালের জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। দেশের একটা বড় সংখ্যক বাসিন্দার দৈনন্দিন খাদ্য ভাত এবং চালজাত অন্যান্য খাবার।
ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, চালের রফতানির উপর এই নিষেধাজ্ঞা ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়। ওই দেশগুলোতে একইভাবে চাল রফতানি করবে রাশিয়া।
ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর তালিকায় আছে, বেলারুস, আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান এবং কিরগিস্তান। এছাড়া, ককেশাস পর্বত ঘেঁষা ওয়েটিয়া প্রদেশ এবং আবখাজিয়া প্রদেশেও চাল রফতানি চালিয়ে যাবে ক্রেমলিন।
পুতিন জানিয়েছেন, তারা চাল রফতানি বন্ধ করলেও অন্য দেশ থেকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের উপর দিয়ে চাল পরিবহণ করা যাবে। মানবিকতার খাতিরে তাতে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে না।
কিছু দিন একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতও। চাল বিদেশে রফতানি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি।
ভারত সরকার জানিয়েছে, দেশীয় জোগান বৃদ্ধির জন্য বাসমতি বাদে অন্য সমস্ত সাদা চালের রফতানি বন্ধ রাখা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে এ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সারাবিশ্বে ৩০০ কোটির বেশি মানুষের কাছে চাল একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য। এই বিপুল চাহিদার ৯০ শতাংশ আসে এশিয়া থেকে।
রাশিয়া এবং ভারতের রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এশিয়ার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উৎস থেকে চালের জোগান বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব অবশ্যই পড়তে চলেছে বিশ্বের বাজারে।
ভারতের চাল রফতানি বন্ধ হওয়ার ফলে বিভিন্ন দেশে প্রবাসী ভারতীয়রা সমস্যায় পড়েছেন। মজুত রাখা চালের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। সেই চালই কিনতে গিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে আমেরিকা ও ব্রিটেনের মতো দেশেও। সূত্র: স্পুটনিক নিউজ, তাস, সিজিটিএন, আর্মেনিয়া নিউজ