প্রচণ্ড গরমের কারণে বগুড়ায় বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, চর্বিযুক্ত খাবার ও গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে অনেক পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জানা যায়, বগুড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে আবহাওয়া বেশ গরম। ঘরে বাইরে সবখানে প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধ বয়সের মানুষগুলো বেশ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এরমধ্যে শিশুরা বিভিন্ন সময়ে ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হচ্ছে। বগুড়ার ১১ টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একটি মেডিকেল কলেজ ও একটি জেলা হাসপাতাল এবং বেসরকারি বিভিন্ন ক্লিনিকে দুই শতাধিক ডায়রিয়ায় আত্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় মেঝেতে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। এছাড়া বহির্বিভাগে ডায়রিয়ার সমস্যায় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছে কমপক্ষে ১২০ থেকে ১৫০ জন। এমনকি জরুরি বিভাগেও রোগীদের ভিড় দেখা গেছে। তবে ঈদুল আজহার পর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী জুলকার নাঈম বলেন, বুধবার বিকেল থেকে বাথরুম হচ্ছিল। রাতে বাথরুম ও সঙ্গে বমি হতে থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হই।
হাসপাতাল এর চিকিৎসকরা বলছেন, ঈদের পর থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যতগুলো বেড রয়েছে, তার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে ডায়রিয়া স্যালাইন সংকট হতে পারে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রচণ্ড গরম ও ঈদ পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষের অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়ার কারণে ডায়রিয়ার আক্রান্তের হার বেড়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে।
এদিকে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া, মফিজপাগলার মোড়, কলোনী এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক ক্লিনিকে প্রায় আরো ১০০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। বেসরকারি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলছেন, ঈদের পর থেকে ডায়রিয়ার চাপ বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে আরো বেশ কিছু রোগী সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন। আবার নতুন করে কিছু রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বগুড়া জেলা ঘনবসতি এলাকা। যে কারণে অনিয়মিত খাবার গ্রহণের ফলে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন ডায়রিয়া রোগী পাওয়া যায়। জনবসতি হিসেবে এটা খুবই কম। ঈদের পর সেখানে ৬২ জন পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বগুড়া জেলার সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছে মোট ৬২ জন।