২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে আলোচিত নামগুলোর একটি ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। একটা সময়ে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই প্রিগোজিনই পুতিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। হয়ে উঠেছেন বন্ধু থেকে শত্রু।
বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো দখলের পথে পা বাড়িয়েছিল তার গঠিত ওয়াগনার গ্রুপ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হয়েছেন প্রিগোজিন। একইসঙ্গে মস্কোমুখি যাত্রা বন্ধ করে নিজ ঘাঁটিতে ফিরতে শুরু করেছে ওয়াগনার সেনারা।
শনিবার আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, তিনি রুশ সরকার ও ওয়াগনার গ্রুপের মধ্যে মধ্যস্থতা করে একটি চুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। যেখানে প্রিগোজিন বলেছেন, তিনি তার সৈন্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিনিময়ে বিদ্রোহ থেকে সরে আসবেন।
এদিকে সরকারিভাবে এই ইস্যুতে কোনও পক্ষই কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়, গৃহযুদ্ধের জেরে কোনও রুশ নাগরিক বা সৈনিকের রক্ত ঝরুক – তা চাননি ওয়াগনার প্রধান।
তবে রুশ প্রশাসনের সঙ্গে কবে বিদ্রোহীদের বৈঠক হবে, তা অবশ্য জানা যায়নি। পাশাপাশি, সেখানে কী কী শর্ত থাকবে, তাও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন তার টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছেন, মস্কোর দিকে অগ্রসরমাণ দলটি থেমে গেছে। রক্তপাত এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আলোচনায় উপস্থিত না থাকলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ মধ্যস্থতা করা হয়েছে। লুকাশেঙ্কো ও প্রিগোজিনের আলোচনার সঙ্গে একমত হয়েছেন পুতিন।
রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শনিবার বিদ্রোহীরা প্রায় মস্কোর কাছাকাছি পৌঁছে যায়। রাজধানী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তারা। কিন্তু আর না এগিয়ে, দ্রুত তাদের ব্যারাকে ফেরার নির্দেশ দেন প্রিগোজিন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রুশ বাহিনী। এই অভিযান শুরুর কয়েক মাস পর রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় রুশভিত্তিক বেসরকারি সামরিক কোম্পানি পিএমসি ওয়াগনার। ইউক্রেন ছাড়াও সিরিয়া, লিবিয়া, মালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থের বিনিময়ে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধ করছেন ওয়াগনারের সেনাসদস্যরা।
রুশ কমান্ডের নেতৃত্বে রাশিয়ার সরকারি সেনাসদস্যদের সঙ্গে এতদিন বেশ ভালোভাবেই মিলেমিশে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছিল পিএমসি ওয়াগনার। তবে গত কয়েক মাস ধরেই ভাসা ভাসা ভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধাদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের খবরও আসছিল।