গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এবং সদস্যসচিব নুরুল হক নূরের মধ্যকার চলমান রেষারেষি বিপাকে ফেলেছে দলের নেতা-কর্মীদের। সংগঠনের দুই ‘উঁচুমাথা’ দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়ায় ভাঙনের মুখে সংগঠন।
গণ অধিকার পরিষদের মূল উদ্যোক্তাদের অন্যতম হাসান আল মামুন বলেছেন, আহ্বায়ক সদস্যসচিবকে বহিষ্কার করে, আহ্বায়ককে বহিষ্কার করে সদস্যসচিব। এভাবে তো চলতে পারে না। তিনি বলেন, রেজা কিবরিয়া ইনসাফ কায়েম কমিটির মিটিংয়ে প্রকাশ্যে যাচ্ছেন। মামুন বলেন, তাদের ১২১ সদস্যের কমিটি আছে। খুব শিগগিরই একটা তদন্ত কমিটি করব। একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
নেতা-কর্মীরা জানান, গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ দুই নেতার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে দলটিতে অস্থিরতা চলছে অনেক দিন ধরেই। বিভিন্ন সময় তারা প্রকাশ্যেও বিরোধে জড়িয়েছেন। সম্প্রতি দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া এবং সদস্যসচিব নুরুল হক একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছেন। তারা নিজ নিজ ফেসবুক পাতায়ও পোস্ট দিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। দুই নেতার বিরোধে দলে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ায় গত রবিবার ঢাকায় রেজা কিবরিয়ার বাসভবনে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর ফলে কোনো সমাধান সেদিন হয়নি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, বৈঠকে রেজা কিবরিয়া দলের সদস্যসচিব নুরুল হকের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেশী দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া রেজা কিবরিয়া দলের তহবিল নিয়ে স্বচ্ছতার প্রশ্ন তোলেন। অন্যদিকে নুরুল হক পাল্টা অভিযোগ করেন যে তাদের দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া অনেক দিন ধরে ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ইনসাফ কায়েম কমিটির কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। সে জন্য তিনি অর্থ পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নুরুল হক। এ ছাড়া দলের কর্মকান্ডে সময় না দেওয়ার অভিযোগও করা হয় রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে। পরদিন রেজা কিবরিয়া বিদেশে চলে যান। তবে রেজা কিবরিয়ার অনুপস্থিতিতে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা আবার বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নুরুল হক। বৈঠকে রেজা কিবরিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় রাশেদ খানকে। একই সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যে দলের কাউন্সিল করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে রেজা কিবরিয়া নূর ও রাশেদ খানকে অব্যাহিত দেন। তারা বলেন, এসব বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীরা বিপাকে রয়েছেন। তারা দলের ভাঙন নয়, সুষ্ঠু সমাধান চান।