আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে নিখোঁজ সাবমেরিনটির এখনও (রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ‘টাইটান সাবমার্সিবল’ নামের ওই ডুবোজাহাজটির টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত রবিবার সমুদ্রে ডুব দেওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই ‘মাদারশিপ’ পোলার প্রিন্সের সঙ্গে সেটির সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর রবিবার, সোমবার এবং মঙ্গলবার পেরিয়ে বুধবার চলে আসলেও রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এটির কোনও সন্ধান মেলেনি।
কিন্তু যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে তাতে জানা গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বহুক্ষণ পর আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে সেই খবর পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আরও আগে উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে খবর পৌঁছলে তারা আরও দ্রুততার সঙ্গে তল্লাশি অভিযান চালাতে পারত।
মার্কিন নৌবাহিনীর নিউক্লিয়ার সাবমেরিন কমান্ডার পদে কর্মরত লেফটেন্যান্ট ডেভিড মার্কেটের দাবি, ডুবোযানের যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ১ শতাংশ। ২০২১ সাল থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখানোর অভিযান চালু করেছে ওশানগেট সংস্থা। মাথাপিছু আড়াই লাখ ডলারের বিনিময়ে গভীর সমুদ্রে নিয়ে গিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে আনে সংস্থাটি।
রবিবারও পাঁচজনকে নিয়ে কানাডার উপকূলের নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে আটলান্টিকের গভীরে নেমেছিল টাইটান। কিন্তু যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরেই নিখোঁজ হয়ে যায় সেটি। উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং কানাডার সেনাবাহিনীকে জানানো হলে যুদ্ধবিমান-সহ জাহাজ নামিয়ে তল্লাশি শুরু হয়।
ওশানগেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২১ ফুট লম্বা এবং ১০,৪৩২ কিলোগ্রাম ওজনের টাইটান সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট গভীরে পানির প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে সক্ষম। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের দাবি ভিন্ন। ডুবোজাহাজের ভিতরে ৯৬ ঘণ্টার জন্য অক্সিজেন মজুত থাকলেও এই পরিস্থিতিতে টাইটানের ফাটল ধরা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। যেকোনও মুহূর্তে কোনও পাইপে ফাটল ধরে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তলার দিক থেকে ডুবোজাহাজের ওয়াটার সিঙ্কের ভিতর পানি প্রবেশের আশঙ্কাও দূর করা যাচ্ছে না। এর ফলে ডুবোজাহাজের ভিতরে বাতাস চলাচলের অসুবিধা হবে। তাছাড়া টাইটানের ভিতর সে সময় যা চাপ সৃষ্টি হবে তা সমুদ্রের পানির চেয়ে প্রায় ৪০০ গুণ বেশি।
আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা জানি সকলে আশা করে রয়েছেন যে আমরা উদ্ধারকাজে সফল হব। কিন্তু সত্যি বলতে কী, উদ্ধারকাজের জন্য আমরা ২০০০ ফুটের বেশি অন্য কোনও ডুবোজাহাজ নামাতে পারি না।” সূত্র: ডেইলি মেইল, মিরর অনলাইন, ডেইলি এক্সপ্রেস