বিলুপ্তির পথে তিস্তার ‘রুপালি’ মাছ বৈরালি

0

দেশের উত্তরাঞ্চলের সুস্বাদু তিস্তা ও ধরলা নদীর রুপালি বৈরালি মাছ দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় বৈরালি মাছ দিয়ে এ অঞ্চলের চাহিদা অনেকটাই মিটত। বর্তমানে বিলুপ্তির পথে সুস্বাদু এ মাছটি। 

উত্তরাঞ্চলের মানুষের মেহমানদারির একমাত্র মাছ বৈরালি। কিন্তু কালের বিবর্তনে এ মাছটিও হারিয়ে যেতে বসেছে। সারা দিন মিলেও জেলেরা পাচ্ছে না ১০ কেজি মাছ। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, নদীতে পানি না থাকার পাশাপাশি পোনা মাছ নিধনের কারণেই বৈরালি বিলুপ্তির পথে। 

নদীতে জাল ফেলে কয়েকবার টানলেও আশানুরূপ মাছ উঠছে না। তাই হতাশায় ভুগছেন হাজারো জেলে। যেটুকু মাছ পাওয়া যায় তা চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। 

তিস্তার পাড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জাল টেনে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন কিছু জেলে। পাতিলে করে মাছ নদীর কিনারায় আনা মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। 

এলাকাবাসী জানায়, ভারতের উজানে একাধিক জায়গায় ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সেচের জন্য বাঁধ দেওয়ার ফলে তিস্তায় স্রোত কমে চর পড়ে যাওয়ায় এবং ধরলা নদীর বাংলাদেশ অংশে পানি কম প্রবাহিত হওয়ায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে বৈরালি মাছ। একই কারণে নদীর দেশি প্রজাতি মাছের সংখ্যাও কমে গেছে মারাত্মকভাবে। হারিয়ে গেছে শুশুক, ঘড়িয়াল, মিঠাপানির কচ্ছপসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণী। 

জেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানান, জানুয়ারি থেকে মার্চ বৈরালি মাছের প্রজনন ও বেড়ে ওঠার সময়। এই সময়ে তিস্তা ও ধরলা নদী থেকে প্রতিদিন বৈরালির পোনা শিকার করছেন জেলেরা। এসব পোনা মিলছে স্থানীয় হাটবাজারে; যা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। এপ্রিলে এসব পোনা বড় হয়। মে-জুনে ওজন বাড়ে, তখন জেলেরা মাছ ধরে লাভবান হতে পারে।

লালমনিরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারুকুল ইসলাম বলেন, তিস্তা ও ধরলায় সুস্বাদু বৈরালি মাছ পাওয়া যায়। প্রতি বছর নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণে মাছ কমে যাচ্ছে। বৈরালি মাছ রক্ষা ও প্রজনন বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। এ মাছের চাহিদা ব্যাপক। ব্যাটারি দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করে মাছ নিধনের বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here