ঘটনাটি আফ্রিকার দেশ মিশরের। সেখানে বেশ কিছু দিন ধরেই বাস করছিলেন রাশিয়ার নাগরিক ইউরি ও তার ২৩ বছর বয়সী ছেলে ভ্লাদিমির পোপোভ। তার ছেলের সঙ্গে একজন বান্ধবীও ছিলেন দেশটিতে।
সম্প্রতি মিশরের রেড সি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন ওই রুশ যুবক। সঙ্গে ছিলেন তার বাবাও। স্থানীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, ঘটনার সময় তার প্রেমিকাও ছিলেন। তবে রুশ গণমাধ্যমের দাবি, সে সময় তার প্রেমিকা রাশিয়ায় অবস্থান করছিলেন।
হাঙরের আক্রমণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়, কীভাবে বাঁচার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন ওই রুশ তরুণ। সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। বাবার উদ্দেশেও শোনা যায় পুত্রের আর্তনাদ, “বাবা, আমাকে বাঁচাও।”
কিন্তু হাঙর ততক্ষণে তাকে সমুদ্রের গভীরে টেনে নিয়ে গেছে। এরপর দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে পোপোভকে নিয়ে খেলায় মেতে ওঠে ওই হাঙর। সেখানে গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করতে পারেননি যুবকের বাবা। শেষ পর্যন্ত মারা যায় ওই রুশ তরুণ।
পরে হাঙরটিকে ধরে ফেলেন সেখানকার জেলেরা। পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় সেটিকে। তারপর সেই হাঙরের পেট থেকে উদ্ধার হয় ওই যুবকের দেহাবশেষ।
ওই তরুণের বাবা ইউরি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার ছেলে একটি হাঙর আক্রমণ করে। মাত্র য়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে যায়।”
তিনি বলেন, “মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যে হৃদয়বিদায়রক ঘটনাটি ঘটে যায়। এটি দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু নয়।”
একজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, তীর থেকে আনুমানিক ৭ মিটার দূরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।”
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হঠাৎ হাঙর ভেসে ওঠে এবং ওই তরুণকে আক্রমণ করে। তিনি নিজেকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেননি।”
তিনি আরও বলেন, “হাঙরটি টানা দুই ঘণ্টা ধরে ওই তরুণকে পানির নিচে টেনে নিয়ে বেরিয়েছে।”
এদিকে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, মৃত হাঙরটিকে মিশরের জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। মমি করে জাদুঘরে রাখা হবে সেটির দেহ। আপাতত হাঙরটিকে গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। গবেষকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন, তার আগ্রাসী আচরণের কারণ কী। এছাড়া, ওই এলাকায় এর আগেও একাধিকবার হাঙরের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সেই আক্রমণগুলোর নেপথ্যেও এই হাঙরটিই ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র: দ্য সান, দ্য নিউ আরব, মিরর অনলাইন