পঞ্চম দিনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল সাত উইকেট। তা সহজেই তুলে নিল তারা। লাঞ্চের আগেই অসহায় আত্মসমর্পণে পর পর দু’বার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলেও জেতা হল না ভারতের। নতুন চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ফলে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম এবং একমাত্র দল হিসেবে তিন সংস্করণের ক্রিকেটে একই সময়ে চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পেল অজিরা।
রবিবার পঞ্চম দিনে ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলি, অজিঙ্ক রাহানেদের থেকে লড়াই দেখতে চেয়েছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু প্রথম সেশনেই তারা আউট হয়ে যান। ভারতের জয়ের আশাও ওখানেই শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু চিন্তা, ভয় এবং সন্দেহই ভারতকে জিততে দিল না। শনিবার যে বিরাট কোহলি অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলছিলেন না। তিনিই রবিবার স্কট বোলান্ডের বলে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট ছোঁয়ালেন। বলের লাইন নিয়ে সন্দেহ ছিল বিরাটের। তাতেই আউট। সেখান থেকে ভারতের চিন্তা বাড়ল। মাত্র দু’টি বল খেলে রবীন্দ্র জাদেজা আউট হতেই সেই চিন্তা বদলে গেল ভয়ে। কোহলি যে তিনটি জিনিস পঞ্চম দিনে চাননি, সেই তিনটি জিনিসই ভারতকে হারিয়ে দিল। পরে রাহানে আউট হতে জয়ের আশাও ছেড়ে দেয় ভারত। বাকিদের উইকেট যাওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা।
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারত। তার পর থেকে আইসিসির একাধিক প্রতিযোগিতার নক আউট পর্বে উঠলেও ট্রফি জেতা হয়নি। কখনও সেমিফাইনাল, কখনও ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছে তারা। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ট্রফি আসছিল না। রোহিত শর্মাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তার নেতৃত্বে ভারত এখনও ট্রফি জিততে পারল না।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিন থেকেই ভারতের সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। দলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না নেওয়া বড় ভুল হয়েছে বলে মনে করা হয়। টেস্টের ক্রমতালিকায় এক নম্বরে থাকা বোলারকে বসিয়ে রেখে খেলতে নামেন রোহিতরা। ওভালের সবুজ পিচ এবং মেঘলা আকাশ দেখে চার পেসার এবং এক স্পিনার নিয়ে নেমেছিল ভারত। কিন্তু প্রথম দিনেই রোদ উঠে যায়। ভারতীয় পেসাররা নির্বিষ হয়ে যান স্টিভ স্মিথ এবং ট্রেভিস হেডের সামনে। তাদের শতরানে ভর করে ভারতের বিরুদ্ধে ৪৪৪ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। অনেকের মতে অশ্বিন থাকলে এত রান তোলা সম্ভব হত না স্মিথদের পক্ষে।
এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিরপেক্ষ ভেন্যু ইংল্যান্ডের দ্য ওভালে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬৯ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২৯৬ রানের বেশি করতে পারেনি ভারত। ফলে ১৭৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অজিরা।
৪৪৪ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় স্কোরবোর্ডে ২৩৪ রান তুলে অলআউট হয় ভারত। এরফলে ২০৯ রানের জয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরলো অজিরা।