লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে বিরোধের জের ধরে তার ভাই মো. সুমনকে (৩৫) পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে আব্দুর রহিম নামের এক ইউপি সদস্য ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। নির্জন স্থানে নিয়ে উলঙ্গ করে সুমনের শরীরে পিঁপড়া ছেড়ে দেওয়া হয়। একপর্যায় পানি চাইলে তার মুখে কাঁদা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনি বমি করলে ফের তার মুখে লতাপাতা ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ পরিচয়দানকারীরা। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সুমন এভাবেই তার ওপর নির্যাতনের বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ ঘটনায় ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভুক্তভোগী সুমন উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ রাজীবের বড় ভাই। তারা চরবাদাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক আবুল বাশারের ছেলে। তারা স্থানীয় পূর্বচরসীতা গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত আব্দুর রহিম উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও একই ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি।
মো. সুমন বলেন, আমি বিভিন্নভাবে আব্দুর রহিম ও তার লোকজনের কাছ থেকে পানি চেয়েছি। তারা আমাকে পানি পর্যন্ত দেয়নি। তারা আমার মুখে কাঁদা ও লতাপাতা ঢুকিয়ে দিয়েছে। তারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পৌঁছার পরই আমার ওপর নির্যাতন শুরু করা হয়।
ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মাজেদ রাজীব বলেন, রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ে আব্দুর রহিমের সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে। গত ডিসেম্বরে তিনি আমার হাত ভেঙে দেন। এ ঘটনার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পন করে আব্দুর রহিম ৮ দিন জেল খেটেছেন। পরে তিনি জামিনে বের হন। এরপর তিনি বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিয়েছে। আমার সঙ্গে শত্রুতার জের ধরেই তিনি সুমনকে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, এ ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযোগ করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা রাজীব তার ভাইকে দিয়ে নাটক সাজিয়ে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন হেলাল বলেন, আব্দুর রহিম এখন যুবলীগের কমিটিতে নেই। বহু আগে তার কমিটি স্থগিত করা হয়েছে । তবুও সে পরিচয় দেয়।
এ ব্যাপারে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, সুমনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সে কয়েকজনের নাম বলেছে, তাদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।