লোডশেডিং সামলাতে বিকল্প চিন্তা

0

দেশে চলমান তীব্র লোডশেডিং সামাল দিতে বিকল্প চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে এবং সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া পায়রা তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে সোমবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বৈঠকে বসেন। সেখানে লোডশেডিং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বেশ কিছু বিকল্প পরিকল্পনা করা হয়, যার বাস্তবায়ন এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এর ফলে আগামী এক সপ্তাহ অর্থাৎ ১২ জুন পর্যন্ত পায়রা বন্ধ হওয়ার জন্য লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও যাতে অবনতি না হয় সে বিষয়ে চেষ্টা করা হবে। জানা যায়, লোডশেডিং সামাল দিতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করে উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। একইভাবে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতেও তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি করে উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। আগামী ২৫ জুনের মধ্যে বাঁশখালীর এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক ১৩৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট ও ভারতের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও সাড়ে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতনরা আশাবাদী যে, আগামী ১২ জুনের পর বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে। আর চলতি জুনের ১২ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত লোডশেডিং প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে। একই সঙ্গে ২৩ তারিখ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে, ৪ জুন রাতে দেশে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৮১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। গতকাল রাতে পায়রা বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ার পর উৎপাদিত হয় ১৩ হাজার ৮৫৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার পরও ৭৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদিত হয়। গতকাল বেলা ৩টায় দেশে ১২ হাজার ৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। ৫ জুন পায়রা বন্ধ হওয়ার পর বেলা ৩টায় দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় ১২ হাজার ২৮ মেগাওয়াট। আর পায়রা বন্ধ হওয়ার আগের দিন ১২ হাজার ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেনি বরং সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে না থাকলে লোডশেডিং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে এমন আশঙ্কা করা হলেও বিষয়টি তা নয়। আমাদের ২০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার মধ্যে পায়রা একটি, যার উৎপাদন সক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। ৫ জুন পায়রার যে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়েছে তা ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট। অর্থাৎ মোট উৎপাদন থেকে আমাদের ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন কমে গিয়েছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্তমানে বেশ কিছু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আশা করছি জুনের ২৩ তারিখ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here