ইয়েমেনের তেলসমৃদ্ধ হাদরামাউত প্রদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এসটিসি) এর যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ সরাসরি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, শনিবার জোটের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, বেসামরিকদের সুরক্ষায় উত্তেজনা প্রশমণের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করা যে কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করা হবে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের (পিএলসি) প্রধান রাশাদ আল-আলিমি হাদরামাউতে এসটিসি ভুক্ত ‘সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা’ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার আবেদন করার পর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র জেনারেল তুর্কি আল-মালকি ওই বিবৃতি দেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, এসটিসি চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ করেই ইয়েমেনের সৌদি আরবের সমর্থিত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে তাদের এডেন সদরদপ্তর থেকে বিতাড়িত করে আর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তৃত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে।
শুক্রবার সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এসটিসিকে অধিকৃত এলাকা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। এসটিসি জানায়, তারা পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হাদরামাউত ও মাহরা প্রদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ জোরদার অব্যাহত রাখবে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি, ১৯৯০ সালের আগে ইয়েমেন যেমন দুই ভাগে বিভক্ত ছিল, তারা সেই স্বাধীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা ফের প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
পরে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান এক্স এ এক পোস্টে এসটিসিকে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা এবং ঐক্যমত্যের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “এসটিসির জন্য উত্তেজনার ইতি ঘটিয়ে, ওই দুই প্রদেশের (হাদরামাউত ও মাহরা) শিবিরগুলো থেকে বাহিনী প্রত্যাহার ও সেগুলো শান্তিপূর্ণভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে সৌদি-আমিরাতের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টায় সারা দেওয়ার সময় হয়েছে।”
এদিকে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার হাদরামাউতের ওয়াদি নাহব এলাকায় এসটিসির অবস্থান লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। যদিও জোটের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে এখনো সরাসরি কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি।
হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত ইয়েমেনি জোটের শরিকদের মধ্যে এই অন্তর্দ্বন্দ্ব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিজেদের মধ্যে এই সংঘাতের সুযোগ নিয়ে ইরান সমর্থিত হুথিরা পুনরায় ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। বর্তমানে ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের একটি বড় অংশ হুথিদের দখলে রয়েছে।

