মসলা ফসল আদা। আদা নাকি মরলেও ঝাঁজ যায় না। সেই আদা আমদানি কমাতে বাড়ির ছায়াযুক্ত আঙিনা, ঘরের পেছনের পতিত জায়গা ও বাড়ির ছাদে আদা চাষের উৎসব শুরু হয়েছে। বস্তায় এই আদা চাষ করা হচ্ছে। বস্তা ভাঙ্গার সময় বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে আদার ঝাঁজ।
কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। এই উপজেলায় গত বছর চাষ করা হয় ৩৬ শত বস্তায় আদা চাষ। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার বস্তা। আগামী বছরে তা ৬০হাজার বস্তায় উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরেজমিন বাগমারা, সুরাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,বাড়ির আঙিনা ও পতিত স্থানে সারি সারি সাদা বস্তা। বস্তার মাথায় উঁকি দিচ্ছে পরিপক্ক আদা গাছ। বাগমারা গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন করেছেন ১৫০০টি বস্তায় আদা চাষ। তিনি বস্তা ভেঙ্গে আদা সংগ্রহ করছেন। আদার মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। সেগুলো ওজন করে দেখেন প্রতি বস্তায় এক কেজির বেশি আদার ফলন হয়েছে।
কৃষক জামাল উদ্দিন , মো. আলম ও মনির হোসেন বলেন, বাড়ির আঙিনায়, ঘরের পেছনে ও বাড়ির ছাদে ছায়াযুক্ত খালি জায়গা পড়ে ছিলো। কৃষি অফিসের পরামর্শ পেয়ে আমরা প্রথমে আদা চাষ করতে চাইনি। কারণ-ছায়ায় আবার ফসল হয় নাকি? তাছাড়া তাও আবার বস্তায়। প্রথম দিকে দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে যাচ্ছিলো, পরে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করি। বেশ ভালো ফসল হয়েছে। যা আমাদের ধারণার বাইরে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করবো।
স্থানীয় উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুর হোসেন সাকিব বলেন,আমার প্রেমু ব্লকের প্রেমু, ব্রাহ্মণখাড়া ও প্রেমু গ্রামে এবার ৩০০০ বস্তা আদা চাষ হয়েছে। আমরা এসব কৃষকদের প্রদশর্ননীর মাধ্যমে অল্প কিছু সহযোগিতা করেছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, এখানের জমি ধান ফসলে ব্যস্ত থাকে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে আদা নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাড়ির পরিত্যক্ত ছায়াযুক্ত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করা হচ্ছে। দেবিদ্বার উপজেলায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে ৩৬শত থেকে ৩১হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। আশা করছি এটি কুষক এবার নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বাজারজাত করতে পারবে। এতে আদার আমদানি নির্ভরত কিছুটা হলেও কমবে বলে বিশ্বাস করি।

