ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান

0
ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে দফায় দফায় হামলার পরও দুই বছর পর গাজা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাসে ফিরে এসেছেন। দখলদার ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এরপরও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোবল শক্ত রয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় পুনরায় পাঠদান শুরু হয়েছে।

ইসরাইলের গোলাবর্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও, ক্লাস চলছে এবং সেখানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। গাজার এই অবস্থা শিক্ষা ও গৃহহীনতার এক কঠিন মিশ্রণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আশ্রয় নেয়া আত্তা সিয়াম নামক এক ব্যক্তি জানান, তারা জাবালিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে এসেছেন, কারণ যাওয়ার আর কোনো জায়গা ছিল না। তবে তিনি বলেন, এটি একটি শিক্ষার স্থান হওয়া উচিত, আশ্রয়কেন্দ্র নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। ইউনেস্কোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে গাজার অধিকাংশ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

প্রথম বর্ষের মেডিকেল শিক্ষার্থী ইউমনা আলবাবা বলেন, তিনি একটি সম্পূর্ণ সুবিধাসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখতেন, তবে বর্তমান পরিস্থিতি তার কল্পনার মতো নয়। তবুও তিনি আশাবাদী, কারণ তারা শূন্য থেকে নতুন করে শুরু করছে।

মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা গাজার শিক্ষাব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘স্কলাস্টিসাইড’ বা শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর ফলে, প্রায় দুই বছর ধরে ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

নতুন পরিসংখ্যানে জানা যায়, গাজায় ৪৯৪টি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১৩৭টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ১২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী এবং ৭৬০ জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন এবং ১৫০ জন শিক্ষাবিদও প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজার শেষ কার্যকর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত ইসরা বিশ্ববিদ্যালয়ও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরাইলি বাহিনী গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার সীমিত সম্পদ দিয়েই পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও বিদ্যুৎ সংকট, সরঞ্জামের অভাব এবং অযোগ্য শিক্ষার পরিবেশ রয়েছে। মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষ চালু থাকলেও, শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ব্যবস্থা নিয়েই তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here