যেকোনো মূল্যে জাপানের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য প্রচেষ্টা প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি জাপানকে ‘যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্র’ হিসেবে চিহ্নিত করে এমন পদক্ষেপকে মানব জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) টোকিওর এক কর্মকর্তার পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দেশটির পক্ষ থেকে এই মন্তব্য করা হয়েছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে দিয়েছে। বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়া এই মন্তব্যকে জাপানের স্পষ্ট পারমাণবিক অভিপ্রায় হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, ‘টোকিও রেড লাইন অতিক্রম করে পারমাণবিক অস্ত্রের উচ্চ আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে।
কিয়োডোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, জাপানের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ওই কর্মকর্তা পারমাণবিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, শেষ পর্যন্ত, আমাদের নিজেদের ওপরই নির্ভর করতে হবে।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজের পরিচালক বলেন, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার চেষ্টা যে কোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে। এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।’ নাম প্রকাশ না করা ওই কর্মকর্তার আরও দাবি, এটি কোনো ভুল মন্তব্য নয় বরং জাপানের বহুদিনের লালিত পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়ার দেশগুলো ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে এবং মানবজাতি মারাত্মক দুর্যোগের সম্মুখীন হবে।
তবে বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে জাতিসংঘের প্রস্তাব অমান্য করে দেশটি পারমাণবিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বহু নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র রাখা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে আসছে। ধারণা করা হয়, দেশটির হাতে বর্তমানে কয়েক ডজন পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে।
উত্তর কোরিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক হুমকি মোকাবিলায় এই অস্ত্র তাদের প্রয়োজন। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেয়া বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং জানান, দেশটি কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়বে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা কখনই পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেব না। এটি আমাদের রাষ্ট্রের আইন, জাতীয় নীতি, সার্বভৌম ক্ষমতা এবং টিকে থাকার অধিকার। কোনো পরিস্থিতিতেই আমরা এ অবস্থান থেকে সরে আসব না।’
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও বলেছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় তারা আগ্রহী, তবে শর্ত হলো—পিয়ংইয়ং তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ধরে রাখার অনুমতি দিতে হবে।

