গ্রীষ্মের তাপদাহে মানুষের ক্লান্তি দূর করতে তরমুজের জুড়ি নেই। ভোজন রসিক মানুষের জন্য দারুণ সুখবর নিয়ে এলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় অফ সিজনের তরমুজ। অফ সিজন তরমুজ আবাদে সফল হয়েছেন অসংখ্য কৃষক।
জানা যায়, তরমুজ চাষ করে উপজেলার নাটঘর, শিবপুর, সাতমোড়া, নবীনগর পূর্ব, বীরগাঁও ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষক সাড়া ফেলেছেন। নবীনগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী জাত নির্বাচন, জমি তৈরি, পরিচর্যা করছেন কৃষক। পরিত্যক্ত পুকুর পাড়, পতিত জমিতে মাচা কিংবা মালচিং পদ্ধতিতে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে এই ফসলের। স্থানীয় বাজারে তরমুজ গড়ে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একেকটা তরমুজ গড়ে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা রাজিব জানান, কম খরচে বেশি ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় সন্তুষ্ট তারা। উচ্চ ফলনশীল তরমুজ চাষ করে কম সময়ে এবং কম খরচে দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভ করার সুযোগ রয়েছে। বীরগাঁও ইউনিয়নের কৃষক জাকির হোসেন জানান, মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে ২০ শতাংশ জমিতে ১৫ হাজার টাকা খরচে ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে ৫০ হাজার টাকার অধিক তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে। একই জমির মালচিং কাজে লাগিয়ে ফেব্রæয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরো ৩থেকে ৪ বার তরমুজ আবাদ করার সুযোগ আছে। যা উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে জানান।
নবীনগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু নোমান জানান, অসময়ের তরমুজ চাষ নবীনগরে হচ্ছে দেখে সফল কৃষকদের পাশাপাশি অন্যরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফলে অসময়ে তরমুজ চাষ নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা। আগামীতে আরও বড় পরিসরে তরমুজ চাষের স্বপ্ন বুনছেন অনেক কৃষক।
নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, তরমুজ এখন সারা বছর হয়। গ্রীষ্মে সারাদেশে আবাদ হয় তাই বছরের অন্য সময়ের তুলনায় অসময়ের তরমুজে ভোক্তাদের আগ্রহ থাকে বেশি। ভোক্তাদের চাহিদায় লাভ বেশি হওয়ায় অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। অসময়ের তরমুজ চাষের সঠিক সময় ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। দুই মাসের মধ্যে ফলন দিতে সক্ষম। ভালো ভালো জাত ইতিমধ্যে দেশে পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর্মসূচির আওতায় মালচিং পেপার, সার ও বীজসহ প্রশিক্ষণ সেবা দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, ফ্ল্যাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট এবং কুমিল্লা অঞ্চলে টেকসই কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং উপকরণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে চলতি মৌসুমে নবীনগর উপজেলা জুড়ে আবাদ হয়েছে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ।

