কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্তে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর একটি প্রদেশে কারফিউ জারি করেছে থাইল্যান্ড। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রাত প্রদেশে এই কারফিউ জারি করা হয়।
দুই দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সংঘাত বন্ধে রাজি হয়েছে। তবে কোনো দেশই ট্রাম্পের সেই দাবি মানেনি। গত মে মাসে সংঘাতে একজন কম্বোডিয়ান সৈন্য নিহত হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীরা এ বছর বেশ কয়েকবার অস্ত্রের আশ্রয় নিয়েছে, যার ফলে সীমান্তের উভয় পাশে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
কারফিউ ঘোষণার পর ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে থাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল সুরাসান্ত কংসিরি বলেন, সামগ্রিকভাবে অব্যাহতভাবে সংঘর্ষ চলছে। আলোচনায় বসার আগে কম্বোডিয়াকে অবশ্যই শত্রুতামূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। থাইল্যান্ড একটি কূটনৈতিক সমাধানের জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু আলোচনা করার আগে কম্বোডিয়াকে প্রথমে শত্রুতা বন্ধ করতে হবে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) থাই বাহিনী জানিয়েছে, তারা কম্বোডিয়ার একটি সেতু ধ্বংস করেছে। তাদের দাবি, এই সেতু ব্যবহার করে কম্বোডিয়া ওই অঞ্চলে ভারী অস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ পাঠাত। এছাড়া কম্বোডিয়ার উপকূলীয় কোহ কং প্রদেশে আগে মোতায়েন করা কামান লক্ষ্য করে অভিযান শুরু হয়।
৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছেন দুই দেশের সেনারা। শনিবার থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, দুই দেশের সেনাদের মুখোমুখি সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন থাই সেনা নিহত হয়েছেন। আহত আড়াইশরও বেশি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে তিনি জানান, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।
তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণা অস্বীকার করেছে দেশ দুটি। শনিবার থাইল্যান্ডের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্ণভিরাকুল বলেন, কম্বোডিয়ার সঙ্গে তাদের যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে। পাল্টাপাল্টি এই হামলার জেরে নিজেদের সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কম্বোডিয়া।
যুদ্ধ থামাতে নতুন প্রস্তাব হাজির করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। বিনিময়ে দুই দেশের সীমান্তে আসিয়ানের সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দেন তিনি। যাদের নেতৃত্ব দেবে মালয়েশিয়ার সেনাবাহিনী। তার এই প্রস্তাবে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত সম্মতি জানালেও সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে থাইল্যান্ড।
সূত্র: রয়টার্স।

