নিজেদের মাঠে আরব কাপ ২০২৫ থেকে ছিটকে গিয়েছে কাতার। তিউনিসিয়ার কাছে তারা হেরে গেল ৩-০ গোলে। একই সময়ে ইতিহাস গড়ে প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল ফিলিস্তিন। সিরিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেই নিশ্চিত হলো তাদের শেষ আটে ওঠা।
কাতারকে টিকে থাকতে হলে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিততেই হতো। কিন্তু আল বায়াত স্টেডিয়ামে উল্টো ভেঙে পড়ে দলটি। ম্যাচের ১৬ মিনিটেই ভয়াবহ ভুল করেন কাতারি গোলরক্ষক মেশাল বারশাম। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে খুব কাছ থেকে বল জালে ঠেলে দেন মোহাম্মদ আলি বেন রোমধানি।
এরপর কিছুক্ষণ রক্ষা পেলেও কাতারের আক্রমণভাগ ছিল সম্পূর্ণ বিবর্ণ। ৬০ শতাংশ বল দখলে থাকলেও আক্রমণে ছিল এলোমেলো। তারকা ফরোয়ার্ড আকরাম আফিফও দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে সেট-পিস থেকে আরও ভেঙে পড়ে কাতার। কর্নার থেকে ইয়াসিন মেরিয়াহর নিচু হেডে ৬২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় তিউনিসিয়া। পরে ২৫ মিনিট বাকি থাকতে লাল কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয় তারা, কিন্তু সেই সুযোগও নিতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। শেষ দিকে মোহাম্মদ বেনালির দুর্দান্ত শটে ৩-০ তে জয় নিশ্চিত করে তিউনিসিয়া। তবে অন্য ম্যাচের ফল অনুযায়ী তারাও শেষ আটে যেতে পারেনি।
অন্যদিকে পুরো ভিন্ন আবহ দেখা গেল আল রাইয়ানে। ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার লড়াইয়ে গোলশূন্য ড্র হলেই নিশ্চিত ছিল দুই দলের কোয়ার্টার ফাইনাল। আর ঠিক সেটাই হলো। ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা আবেগে ভেঙে পড়েন, উৎসবে মেতে ওঠেন সমর্থকেরাও।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে কাতারকে হারিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল ফিলিস্তিন। দ্বিতীয় ম্যাচে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও লড়াই করে ড্র করে তারা। সিরিয়া আবার প্রথম ম্যাচেই ১-০ গোলে হারিয়েছিল তিউনিসিয়াকে। ফলে শেষ ম্যাচে এক পয়েন্ট পেলেই শেষ আট নিশ্চিত ছিল দুই দলেরই।
শেষ বাঁশি বাজতেই দেখা যায় আনন্দের বিস্ফোরণ। ফিলিস্তিনি খেলোয়াড়রা পতাকা হাতে সমর্থকদের সঙ্গে উদযাপনে মেতে ওঠেন। গাজায় জন্ম নেওয়া ডিফেন্ডার মোহাম্মদ সালেহ তো হাতেই তুলে নেন ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার পতাকা।
চমক এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দুই দেশ ফিলিস্তিন ও সিরিয়া যেখানে এখনো বিশ্বকাপে উঠতে পারেনি, সেখানে তাদের ফিফা র্যাংকিংও অনেক নিচে। ফিলিস্তিন ৯৬ নম্বরে, সিরিয়া ৮৭তম। অথচ দুজনই শেষ আটে, আর ৪৫ র্যাংক এগিয়ে থাকা কাতার ছিটকে গেছে গ্রুপ পর্বেই। আফ্রিকার সেরা দলগুলোর একটি তিউনিসিয়াও বাদ।
তবে এসব নিয়ে ভাবার সময় নেই ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার। এখন তাদের চোখ আরব কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। এটাই তাদের নতুন ইতিহাস।

